ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পরপরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা। তিনি দাবি করেছেন, এই রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তার দলকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার কৌশল মাত্র।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, পাঁচ পৃষ্ঠার বিবৃতিতে শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাকে টার্গেট করেই এই বিচারিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছে। তার দাবি, বিচার প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্ব ছিল এবং ন্যায়বিচারের মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়নি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে অকার্যকর করতে এবং ভবিষ্যতে রাজনীতিতে পুনরাগমন ঠেকাতেই তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তার সরকারের সময়ে মানবাধিকার ও উন্নয়ন খাতে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তাই মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন তিনি। শেখ হাসিনা জানান, প্রকৃত আন্তর্জাতিক মানের আদালত হলে তিনি অভিযোগকারীদের মুখোমুখি হতে কখনোই ভয় পেতেন না।
তার আরও বক্তব্য, অন্তর্বর্তী সরকার যদি সত্যিই অভিযোগগুলোকে সঠিক মনে করে, তাহলে তারা যেন হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) বিষয়টি উপস্থাপন করে। সেখানে নিরপেক্ষ বিচার হলে সব সত্য প্রকাশ পাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাইব্যুনালের এই রায়কে তিনি ‘প্রহসন’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই বিচার জনগণের রায়ের পরিপন্থী। ভারতে আশ্রয় নেওয়ার আগেই তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেয়। একই মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আদালত একই সঙ্গে শেখ হাসিনা ও কামালের দেশে থাকা সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে জুলাই বিপ্লবে নিহত-আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
সিএ/এমআরএফ


