বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিবেশী একটি দেশ, এমন অভিযোগ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর তিনি এ মন্তব্য করেন। রায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনকে বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনে পুনরায় কূটনৈতিক চিঠি পাঠানো হবে। তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পাশের দেশ থেকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে অশান্তি উসকানি দেওয়া হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, রায় ঘোষণার পর জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ছোটখাটো কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও তা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আত্মরক্ষার স্বার্থে আইন অনুযায়ী গুলি করার ক্ষমতা রয়েছে, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োগ করতে পারে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল গতকাল রায়ে উল্লেখ করেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাকে তিনটি অভিযোগে দণ্ডিত করা হয়েছে। এক নম্বর অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও একই রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজসাক্ষী হিসেবে সত্য উদঘাটনে সহায়তা করার জন্য সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। রায় ঘোষণার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারি ও প্রস্তুতি বাড়িয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কোনো প্রকার হিংসাত্মক কার্যক্রমের সুযোগ দেওয়া হবে না। দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত।” তিনি জনগণকে অশান্তি সৃষ্টিকারী বা হিংসাত্মক কার্যক্রমে জড়িয়ে না পড়ার আহ্বান জানান।
সিএ/এমআরএফ


