বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক পেসার জাহানারা আলমের গুরুতর অভিযোগকে কেন্দ্র করে তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বিবৃতিতে বিসিবি জানায়, সাবেক বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের এক সদস্যের মাধ্যমে গণমাধ্যমে উত্থাপিত কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তারা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে। বিষয়টির সংবেদনশীলতা বিবেচনায় নিয়ে অভিযোগগুলোর সঠিকতা যাচাই এবং দায় নির্ধারণে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিসিবি আরও জানায়, বোর্ড সবসময় খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি নিরাপদ, সম্মানজনক ও পেশাদার কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। যে কোনো ধরনের অনৈতিক আচরণ বা হয়রানির অভিযোগ বোর্ড অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে এবং তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পাশাপাশি তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালে গণমাধ্যমকে অনুমাননির্ভর প্রতিবেদন বা মন্তব্য থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে প্রক্রিয়াটি প্রভাবিত না হয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জাহানারা আলম বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলে নিজের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে বেশ কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভয়াবহ যৌন হেনস্তা ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত এই পেসার অভিযোগ করেন, সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, প্রয়াত নারী দলের ইনচার্জ তৌহিদ মাহমুদ, ম্যানেজার ফাইয়াজ, কর্মকর্তা বাবু, কোচ ইমন এবং ক্রিকেটার নিগার সুলতানা জ্যোতি, পিংকি, নাহিদা ও রিতুমনির মতো একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
জাহানারার দাবি, এসব ঘটনার সময় তিনি বারবার বোর্ডের কাছে অভিযোগ করলেও সেগুলো আমলে নেওয়া হয়নি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাকে দল থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ কারণে তিনি গত কয়েক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় ক্লাব ক্রিকেট খেলছেন এবং বাংলাদেশ দলে ফিরতে পারেননি।
এ বিষয়ে বিসিবির এক পরিচালক জানান, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর এবং ইতোমধ্যে বোর্ডের সভাপতি ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “অভিযোগগুলো অনেক বিস্তৃত ও বহুজনের বিরুদ্ধে। তাই এটি বোর্ড পর্যায়ে গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হবে। আমরা জানতে চাই, আসল ঘটনা কী এবং কারা দায়ী।”
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটে এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে খেলোয়াড়দের মধ্যেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। দেশের ক্রীড়া অঙ্গনের বিভিন্ন মহলও এ বিষয়ে দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
সিএ/এমআরএফ


