আজকের দিনে মোবাইল ও ল্যাপটপ ব্যবহার শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। পড়াশোনা, অফিসের কাজ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন অনেক কাজেই এখন ডিজিটাল ডিভাইসের ওপর নির্ভর করতে হয়। ফলে দিনের বেশির ভাগ সময়ই কাটে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে। কাজ শেষ হলেও বিনোদনের জন্য আবার মোবাইল দেখা—ডিজিটাল জীবন থেকে যেন মুক্তি নেই।
ধীরে ধীরে স্ক্রিন টাইম বেড়ে চলেছে। বেশি সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের ক্ষতি হয়, এ কথা প্রায় সবাই জানেন। স্ক্রিন থেকে বের হওয়া ব্লু রে চোখের ওপর চাপ ফেলে। দীর্ঘ সময় একটানা স্ক্রিন দেখলে চোখ ক্লান্ত, শুষ্ক ও জ্বালাপোড়া অনুভব হয়। অনেক সময় মাথাব্যথা ও ঝাপসা দেখার সমস্যাও দেখা দেয়।
স্ক্রিনের দিকে বেশি তাকালে কী হয়?
একটানা স্ক্রিন দেখলে চোখের স্বাভাবিক পানি শুকিয়ে যায়। চোখ জ্বালা, মাথাব্যথা, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া এবং চোখে অস্বস্তি দেখা দেয়।
কেন এই সমস্যা হয়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ক্রিন ব্যবহারের সময় আমরা স্বাভাবিকের তুলনায় কম চোখের পলক ফেলি। সাধারণভাবে একজন মানুষ প্রতি মিনিটে ১৫-২০ বার পলক ফেলেন। কিন্তু স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে তা কমে গিয়ে প্রায় ৭-১০ বারে নেমে আসে। ফলে চোখের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা কমে যায় এবং চোখ শুষ্ক হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন এমন চললে ড্রাই আইয়ের সমস্যা হতে পারে।
কতটা স্ক্রিন টাইম নিরাপদ?
স্ক্রিন টাইম সবার জন্য এক রকম নয়। বয়স, চোখের স্বাস্থ্য, স্ক্রিনের ধরন ও আলো—সবকিছুর ওপর এটি নির্ভর করে। তবে কিছু সাধারণ নিয়ম মানলে চোখ ভালো রাখা সম্ভব।
২-৫ বছরের শিশুদের জন্য দিনে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা
৬-১৮ বছরের শিশুদের জন্য দিনে প্রায় ২ ঘণ্টা
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দিনে ৪-৫ ঘণ্টা তুলনামূলক নিরাপদ
অনলাইন ক্লাস বা অফিসের কাজের সময় নিয়মিত বিরতি নেওয়া জরুরি।
চোখে বেশি চাপ পড়ছে বুঝবেন কিভাবে?
মাথাব্যথা, চোখ শুষ্ক হওয়া, চোখ জ্বালা, মনোযোগে সমস্যা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া বা ঘুমের ব্যাঘাত—এসব লক্ষণ স্ক্রিন স্ট্রেসের ইঙ্গিত। শিশুদের ক্ষেত্রে বিরক্তি বা অস্থিরতাও দেখা যেতে পারে। এমন হলে স্ক্রিন টাইম কমানো এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
চোখের ক্ষতি কমাতে কী করবেন?
স্ক্রিন একেবারে এড়ানো সম্ভব না হলেও কিছু অভ্যাস চোখকে রক্ষা করতে পারে। ২০-২০-২০ নিয়ম অনুসরণ করা ভালো—প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ ফুট দূরের কোনো কিছুর দিকে ২০ সেকেন্ড তাকান। এতে চোখের পেশি আরাম পায়। সচেতনভাবে চোখের পলক ফেলুন। এছাড়া প্রতি ঘণ্টায় ৫–১০ মিনিট বিরতি নিলে চোখ ও শরীর দুটোই স্বস্তি পায়।
সিএ/এএ


