কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের দ্রুত অগ্রগতি ইউটিউব কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য ‘ভয়ের সময়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ইউটিউবার মিস্টারবিস্ট।
তার মতে, জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (GenAI) উন্নতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে লাখ লাখ নির্মাতা, যারা ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন, তাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
মিস্টারবিস্ট, যার আসল নাম জিমি ডোনাল্ডসন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন তোলেন— “যখন এআই-তৈরি ভিডিও মানুষের তৈরি ভিডিওর মতোই ভালো হবে, তখন আমাদের মতো নির্মাতাদের কী হবে?”
গত কয়েক বছরে এআই টুলগুলোর সক্ষমতা বিস্ময়করভাবে বেড়েছে। এখন কেবল কয়েকটি নির্দেশনা বা প্রম্পট দিলেই সম্পূর্ণ ভিডিও তৈরি সম্ভব। ওপেনএআই সম্প্রতি ‘সোরা’ নামের একটি নতুন ভিডিও-জেনারেটিং টুল উন্মোচন করেছে, যা কপিরাইটযুক্ত চরিত্র ও দৃশ্য নকল করতে সক্ষম। এই টুল নিয়ে ইতোমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই প্রযুক্তির কারণে সৃজনশীল পেশাগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে। চলচ্চিত্র ও গেম শিল্পে এআই ব্যবহারের বিরোধিতায় একাধিক দেশেই ধর্মঘট ও প্রতিবাদ হয়েছে।
অন্যদিকে, ইউটিউব এখন নির্মাতাদের জন্য এআই ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে। এর মাধ্যমে ভিডিও তৈরির পাশাপাশি সাবটাইটেল জেনারেশন ও স্ক্রিপ্ট সম্পাদনার সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে।
‘নটিংহ্যাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি’র ডিজাইন ও ইনোভেশন বিভাগের অধ্যাপক লার্স এরিক হোলমকুয়েস্ট জানান, “বর্তমানে অনেক ইউটিউব ভিডিওই পুরোপুরি এআই দিয়ে তৈরি, বিশেষ করে দীর্ঘ ভিডিও—যেগুলো মানুষ ঘুমানোর সময় চালিয়ে রাখেন।”
তিনি আরও বলেন, “এআইকে আমরা যখন হাতিয়ার হিসেবে দেখি, তখন বুঝতে পারি এটি সৃজনশীলতাকে অনেকটাই সস্তা করে দিচ্ছে।”
তবে হোলমকুয়েস্ট মনে করেন, মিস্টারবিস্টের মতো শীর্ষ নির্মাতাদের জায়গা সহজে নিতে পারবে না এআই। তার ভাষায়, “মিস্টারবিস্টের ভিডিও জনপ্রিয় কারণ সেখানে বাস্তব মানুষকে কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে দেখা যায়—এটি এআই দিয়ে সম্ভব নয়।”
সিএ/এমআর