যে কোনো বোলারের জন্য হ্যাটট্রিক ক্রিকেটের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্যগুলোর একটি। পরপর তিন বলে তিন উইকেট নেওয়ার অনুভূতি অন্য কিছুর সঙ্গে তুলনীয় নয়। বিপিএলের দ্বাদশ আসরে সেই বিরল কীর্তির স্বাদ পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার মেহেদী হাসান রানা। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো হ্যাটট্রিক করে এবারের আসরের হ্যাটট্রিকের খাতা খুলেছেন তিনি।
ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে দুর্দান্ত বোলিংয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন মেহেদী হাসান রানা। প্রথমে মেহেদী হাসান মিরাজকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান তিনি। এরপর ধ্রুপদী স্লোয়ারে নাসুম আহমেদকে পরাস্ত করেন। হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয় লেট অর্ডার ব্যাটসম্যান খালেদকে শর্ট বলে পরীক্ষা নিয়ে। বল উড়াতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন খালেদ। খাপাটে উদযাপনে সতীর্থদের সঙ্গে হ্যাটট্রিকের আনন্দ ভাগাভাগি করলেও দিন শেষে শেষ হাসি হাসতে পারেননি এই পেসার। চরম নাটকীয়তায় শেষ বলে ম্যাচ জিতে নেয় সিলেট টাইটান্স।
বিপিএলের ইতিহাসে এটি ছিল নবম হ্যাটট্রিক। এর আগে আটজন বোলার এই কীর্তি গড়েছেন। ২০১২ সালে বিপিএলের প্রথম আসরে একমাত্র হ্যাটট্রিকটি করেন দুরন্ত রাজশাহীর মোহাম্মদ সামি। সে ম্যাচে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের ড্যারেন স্টিভেন্স, আফতাব আহমেদ ও নাভেদ উল হাসানের উইকেট নেন তিনি।
তিন বছর পর ২০১৫ সালে বরিশাল বুলসের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন আল-আমিন হোসেন। সিলেট সুপারস্টারসের বিপক্ষে তার শিকার ছিলেন রবি বোপারা, নুরুল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। ২০১৯ সালের বিপিএল ছিল হ্যাটট্রিকের দিক থেকে সবচেয়ে সমৃদ্ধ আসর, যেখানে দেখা যায় তিনটি হ্যাটট্রিক। শুরুটা করেন ঢাকা ডায়নামাইটসের আলিস আল ইসলাম। নিজের অভিষেক ম্যাচেই তিনি মোহাম্মদ মিঠুন, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও ফরহাদ রেজার উইকেট তুলে নেন।

একই আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন ওয়াহাব রিয়াজ। তার শিকার ছিলেন ডেভিড ভিসে, তাইজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাদ্দাম। এরপর ঢাকার হয়ে খেলা আন্দ্রে রাসেল চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন। সে ম্যাচে তার বলে আউট হন মুশফিকুর রহিম, ক্যামেরুন ডেলপোর্ট ও দাসুন শানাকা।
২০২২ বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের এক পেসার সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন। ওই ম্যাচে মৃতুঞ্জয় আউট করেন এনামুল হক, মোসাদ্দেক হোসেন ও রবি বোপারাকে।
গত বিপিএলেও দেখা যায় দুটি হ্যাটট্রিক। দুর্দান্ত ঢাকার শরিফুল ইসলাম ফিরিয়ে দেন খুশদিল শাহ, রোস্টন চেজ ও মুকিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। পাশাপাশি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মঈন আলী চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের শহীদুল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন ও বিলাল খানকে আউট করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন।
এবার নোয়াখালী এক্সপ্রেসের হয়ে মেহেদী হাসান রানা সেই তালিকায় নতুন করে নাম লেখালেন। আসরের বাকি অংশে এই অভিজাত তালিকায় আরও কারও নাম যুক্ত হয় কিনা, সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।
সিএ/বিই


