অ্যাডিলেডে গোলাপি বলের টেস্টে ইংল্যান্ডের পরিস্থিতি সংকটাপন্ন ছিল। দুই উইকেটে মাত্র ৫ রান যোগ হওয়ার পর হঠাৎ তিন ওভারের ব্যবধানে দুই উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। তখন মাঠে নামেন জো রুট। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের দাপটের মধ্যেও যেন কিছুই হয়নি—নিশ্চিন্তভাবে ব্যাট চালানো শুরু করেন তিনি।
৯৭ রানে পৌঁছনোর পর অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি স্টাম্পের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে চাপ বাড়ান। স্কট বোল্যান্ডের একটি বল পায়ের ওপর লাগে। রুটের হালকা স্পর্শে বল ফাইন লেগ সীমানায় গড়িয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে দুই হাত আকাশের দিকে তুলে আনন্দ প্রকাশ করেন রুট। চোখে দেখা যায় আনন্দের অশ্রু।
১২ বছর, ৭টি ভিন্ন ভেন্যু, ৩৪টি টেস্ট এবং ৪৬টি ইনিংস—এত দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট শতক পেলেন জো রুট। ২০১৩ সাল থেকে অজিদের মাটিতে বারবার এসেছেন তিনি। ফিফটির সংখ্যা আছে ১৩টি, ওয়ানডেতে একবার ৯১* করেছেন, কিন্তু শতক যেন বারবার চোখের সামনে থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল। এবার আর সুযোগ মিস করলেন না। ১৮১ বলে ১১টি চারের সাহায্যে পূর্ণ করলেন কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্ক। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ৪০তম শতক। রিকি পন্টিংয়ের ৪১টি শতকের রেকর্ড এখন মাত্র এক ধাপ দূরে।
ম্যাচের শুরুটা ছিল চ্যালেঞ্জিং। ওপেনাররা দ্রুত ফিরে যান। রুট প্রথমে জ্যাক ক্রলির সঙ্গে গড়েন ১১৭ রানের জুটি। ক্রলি ৭৬ রানে আউট হন। এরপর হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস, উইল জ্যাকস—একের পর এক ফিরে যান। কিন্তু এক প্রান্তে ধৈর্য ধরে থাকেন রুট। শান্ত, ধীর, অটল।
অ্যাশেজের এই দ্বিতীয় টেস্টে গোলাপি বলের আলোয় ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ব্যাটার রুট যেন নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে মধুর অধ্যায় লিখে ফেললেন।


