ওপেনএআই সম্প্রতি তাদের নতুন এআই-চালিত ওয়েব ব্রাউজার ‘অ্যাটলাস’ উন্মোচন করেছে, যা চ্যাটজিপিটির ক্ষমতাকে সরাসরি ব্রাউজিংয়ে যুক্ত করবে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য ব্যবহারকারীদের জন্য আরও গভীর, সুবিধাজনক এবং এআই-সমর্থিত ওয়েব অভিজ্ঞতা তৈরি করা।
অ্যাটলাসে প্রচলিত অ্যাড্রেস বার নেই, বরং ইন্টারফেস পুরোপুরি চ্যাটজিপিটির চারপাশে সাজানো। ব্যবহারকারীরা যেকোনো ওয়েবপেজে সাইডবার খুলে তথ্য সংক্ষেপ, পণ্য তুলনা বা বিশ্লেষণ করতে পারবে। এতে রয়েছে ‘এজেন্ট মোড’, যা ব্যবহারকারীর হয়ে অনুসন্ধান, কেনাকাটা, এমনকি ভ্রমণ পরিকল্পনা তৈরি করতে সক্ষম। ওপেনএআই প্রদর্শনীতে দেখিয়েছে, অ্যাটলাস রান্নার রেসিপি খুঁজে ইন্সটাকার্ট থেকে উপকরণ কিনতেও পারছে।
অ্যাটলাস ইটসি, শপিফাই, এক্সপেডিয়া ও বুকিং ডটকমের মতো প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সংযুক্ত, ফলে ব্যবহারকারীরা সরাসরি ব্রাউজার থেকে এসব সেবা নিতে পারবেন।
সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা:
কিংস কলেজ লন্ডনের এআই ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এলেনা সিমপার্ল বলেন, “একাধিক লিংক না খুঁজেও প্রাসঙ্গিক তথ্য ও সংক্ষিপ্তসার পাওয়া সবচেয়ে বড় সুবিধা।” তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, সব সংক্ষিপ্তসারের নির্ভুলতা নিশ্চিত নয়।
নিরাপত্তার জন্য, অ্যাটলাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবেদনশীল ওয়েবসাইটে থেমে যাবে এবং কোড বা ফাইল ডাউনলোড করতে পারবে না। ‘ব্রাউজার মেমোরি’ ফিচার ব্যবহারকারীর ব্রাউজিং ইতিহাস সংরক্ষণ করবে, যা ঐচ্ছিক।
গুগলের জন্য হুমকি?
২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত ডেস্কটপ ব্রাউজারে ৫.৯৯% সার্চ হয়েছে এআই-ভিত্তিক টুলের মাধ্যমে। তবে গুগলও পিছিয়ে নেই—তাদের জেমিনি এআই ইতিমধ্যেই ক্রোমে যুক্ত এবং ভবিষ্যতে আইওএস-এ আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অ্যাটলাস কৌতূহল সৃষ্টি করবে, কিন্তু কতটা ব্যবহারকারীর বিশ্বাস অর্জন করবে এবং ক্রোম বা এজের মতো প্রতিষ্ঠিত ব্রাউজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
বাজারে অবস্থান:
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে স্ট্যাট কাউন্টার অনুযায়ী, বৈশ্বিক ব্রাউজিং বাজারের ৭১.৯% এখনো ক্রোমের দখলে। তবে অ্যাটলাস অনলাইন বিজ্ঞাপনের বাজারে নতুন প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে পারে।
বর্তমানে অ্যাটলাস ম্যাকওএস ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত। ফ্রি, প্লাস, প্রো ও গো সাবস্ক্রিপশনধারীরা ব্যবহার করতে পারছেন। শিগগিরই উইন্ডোজ, আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণও প্রকাশ করা হবে।
সিএ/এমআর


