‘নাহ, চাকরিটা ছেড়েই দেব!’—এমন ভাবনা কি বারবার মাথায় ঘুরছে? কাজের চাপ, অসন্তুষ্টি, টক্সিক পরিবেশ বা বেতন–পদোন্নতি নিয়ে হতাশা—সব মিলিয়ে অনেকেই চাকরি ছাড়ার কথা ভাবেন। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করা দরকার। এতে হয়তো বুঝতে পারবেন, সত্যিই চাকরি ছাড়ার সময় এসেছে কি না।
১. থেকে যাওয়ার কথা কি ভেবেছি?
যদি মনে হয় কাজের পরিবেশ আপনার আত্মসম্মান বা মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে, তবে ছেড়ে দেওয়াই শ্রেয়। তবে সমস্যা কোথায়—তা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করুন। কাজের চাপ, সহকর্মী, বেতন, বা প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি—সবকিছু বিবেচনায় নিন।
২. আমি এখানে কীভাবে পৌঁছালাম?
এই চাকরিতে কেন এসেছিলেন এবং এর মাধ্যমে কী অর্জন করেছেন—তা ভাবুন। অতীতের সিদ্ধান্ত বিশ্লেষণ করলে বর্তমান পরিস্থিতি পরিষ্কার হবে এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সহজ হবে।
৩. কত দিন ধরে চাকরি ছাড়ার কথা ভাবছি?
যদি বহুদিন ধরে এই চিন্তা মাথায় থাকে, তবে হয়তো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। তবে বার্নআউটের আশঙ্কা থাকলে আগে কিছুদিন বিশ্রাম নিন বা ছুটি নিন।
৪. আমি আসলে কী করতে চাই?
আপনার জীবনের লক্ষ্য কী? শুধু বর্তমান চাকরি নয়, নিজের মূল্যবোধ, প্যাশন ও ভবিষ্যতের দিকও বিবেচনা করুন।
৫. বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা কী বলছে?
চাকরি ছাড়ার আগে কাছের মানুষদের পরামর্শ নিন। তারা হয়তো এমন কিছু দেখাতে পারবেন, যা আপনি দেখছেন না।
৬. চাকরি ছাড়লে আমি কী হারাব?
চাকরি ছাড়লে স্থিতিশীলতা, বন্ধুত্ব বা নিয়মিত আয়ের নিশ্চয়তা হারাতে পারেন। তাই ত্যাগের দিকটাও ভাবুন।
৭. বসের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা কি করেছি?
অনেক সময় সামান্য আলোচনা বা নতুন দায়িত্ব পেলে কাজের প্রতি আগ্রহ ফেরে। তাই ছাড়ার আগে আলোচনায় বসুন।
৮. চাকরি, নাকি বসকে ছাড়তে চাই?
সমস্যা যদি শুধু বস বা নির্দিষ্ট সহকর্মীর সঙ্গে হয়, তাহলে HR বিভাগের সাহায্য নিন। টক্সিক বসের কারণেই যেন ভালো চাকরি না ছাড়েন।
৯. আমার প্রত্যাশাগুলো কি বাস্তবসম্মত?
চাকরির জগতে ১০০% সন্তুষ্টি পাওয়া কঠিন। তাই আপনার প্রত্যাশা যেন বাস্তবতার সঙ্গে মেলে, তা নিশ্চিত করুন।
১০. আমি কি সত্যিই চাকরি ছাড়ার সামর্থ্য রাখি?
অন্য চাকরি খুঁজতে গেলে ৩–৬ মাসের খরচের জন্য সঞ্চয় রাখা উচিত। ফ্রিল্যান্স বা ব্যবসা শুরু করলে অন্তত এক বছরের সঞ্চয় জরুরি।
১১. এখন কি চাকরি ছাড়ার সঠিক সময়?
চাকরির বাজার কেমন, বিকল্প সুযোগ কতটা—সব বিবেচনা করুন। হঠাৎ সিদ্ধান্ত না নিয়ে পরিকল্পনা করে পদক্ষেপ নিন।
১২. কেন সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না?
সব কিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকবেন না। একসময় সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। নিজের প্রতি আস্থা রাখুন এবং নির্দিষ্ট একটি তারিখ ঠিক করুন সিদ্ধান্তের জন্য।
সূত্র: গার্ডিয়ান
সিএ/এমআর