Home বিনোদন মোনালিসার ছবি চুরি!!

মোনালিসার ছবি চুরি!!

0

জাকিয়া সুলতানা প্রীতি ||

“চুরি” শব্দটাই নেতিবাচক, তবে অনেক সময় এই নেতিবাচক শব্দটাকেই শিল্পের সমাদর দেয়া হয়।

ব্যপারটা অদ্ভুত না?চৌর্যবৃত্তি তখনই শিল্প হয়ে ওঠে যখন চুরি করার কৌশলটা হয় অকল্পনীয়। আর যে জিনিসটি চুরি করা হবে, সে জিনিসটি যদি নিজেও একটা শিল্প হয় তাহলে তো আর কথাই নেই! বাংলায় একটি প্রবাদ আছে,”চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা,যদি না পড়ো ধরা” তবে সবসময় যে এই বিদ্যাবান আর্টিস্ট চোর ধরা পড়ে না,তা কিন্তু নয়। মাঝে মধ্যে ধরাও পরে,এবং কিছু কিছু চুরির ঘটনা ইতিহাসেও স্থান করে নেয়। মাঝে মাঝে এই চুরির ঘটনা চুরি হয়ে যাওয়া বস্তুটিকেও বিখ্যাত করে তোলে! যেমনটি ঘটে ছিলো “মোনালিসার” ক্ষেত্রে!

হ্যা,লিওনার্দো দ্যা ভিন্ঞ্বির বিখ্যাত শিল্পকর্মটির কথাই বলছি। চুরি হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত “মোনালিসা” এতোটা বিখ্যাত ছিলো না। ছবিটি ফ্রান্সের প্যারিসের লুভ্যর মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ছিল। ১৯১১ সালের ২১শে আগস্ট, সোমবার বিশ্বের শিল্প ইতিহাসে স্থান পাওয়া একটি ঐতিহাসিক দিন। কারণ, ঐ দিনই মিউজিয়াম থেকে চুরি হয়ে যায় মোনালিসা চিত্রকর্মটি,আর চুরি করেন তিনজন ভিনসেনজো পেরুজিয়া,ল্যান্সেলত্তি ও মিকেলে। এদের মধ্যে পেরুজিয়া ছিল একাজে তাদের সর্দার,মিউজিয়ামের অভ্যন্তর ভাগ সম্পর্কে তার স্বচ্ছ ধারণা ছিলো। সোমবার,মিউজিয়াম স্বাপ্তাহিক বন্ধের দিন,তাই তারা আগের দিন মিউজিয়ামে ঢুকে স্যালন কারের পাশে একটি স্টোর রুমে লুকিয়ে ছিলো। স্যালন কার হলো সেই জায়গা যেখানে রেঁনেসা যুগের ছবি রাখা হতো,তারা সেখান থেকে ছবিটি নিয়ে পালিয়ে যায়। চুরি হয়ে যাওয়ার ২ বছর পর্যন্ত এটার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি। অবশেষে ১৯১৩ সালে পেরুজিয়া ছবিটি নিয়ে প্যারিস থেকে ফ্লোরেন্সে আসে এবং অবশেষে একটা আর্ট ডিলারের কাছে বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। পেরুজাকে চুরির কারণ জিজ্ঞেস করা হলে সে বলে, “মোনালিসা তার জন্মভূমি ইতালিতেই থাক এটাই সে চেয়েছিলো”। পেরুজিয়ার এ উত্তর তাকে রীতিমত নায়ক বানিয়ে দেয় এবং এজন্য চুরির অপরাধে তার শাস্তি হয়েছিল মাত্র ৬ মাস।

মোনালিসা এতোদিন শুধু শিল্পবোদ্ধাদের কাছেই পরিচিত ছিলো। কিন্তু চুরি হবার পর এটি সাধারণ মানুষদের কাছেও পরিচিত হয়ে ওঠে। প্রায় প্রতিদিনই লক্ষ লক্ষ মানুষ লুভ্যর মিউজিয়ামে ভিড় করে এ অসাধারণ চিত্রকর্মটি দেখার জন্য।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version