Home বিনোদন আদালতের রায়ে মেয়ের অভিভাবকত্ব পেলেন অভিনেত্রী বাঁধন

আদালতের রায়ে মেয়ের অভিভাবকত্ব পেলেন অভিনেত্রী বাঁধন

0

স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের জেরে সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে টানাপড়েনে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হলেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।সোমবার ঢাকার দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান একমাত্র কন্যা সন্তান মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব দিয়েছেন বাঁধনকে।

আদেশে বিচারক বলেছেন, “কন্যাশিশুর অভিভাবক হচ্ছেন মা। মায়ের জিম্মায়ই মেয়ে থাকবে। কন্যার সর্বোত্তম মঙ্গলের জন্য মায়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। বাবা মাসে কেবল দুই দিন মায়ের বাড়িতে গিয়ে মায়ের উপস্থিতিতে মেয়েকে দেখে আসবেন।”

রায় আরো বলা হয়েছে, “কন্যা শিশুকে নিয়ে মা দেশের ভেতরে এবং বাইরে যেতে পারবেন যেহেতু মা’ই কন্যা শিশুর অভিভাবক।” কন্যা সায়রার পাসপোর্ট তার বাবা আটকে রেখেছেন বলেও বাঁধনের অভিযোগ ছিল।

আদালত পাসপোর্টটি ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে বাঁধনের আইনজীবী দিলরুবা শরমিন বলেন, “যদি সন্তানের বাবা তা না দেন, তবে বাদীকে থানায় জিডি করতে বলেছেন এবং নতুন পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য পাসপোর্ট অফিসে বিজ্ঞ আদালত চিঠি ও আদেশ পাঠিয়ে দেবেন।” রায়ের সময় বাঁধনের প্রাক্তন স্বামী মাশরুর সিদ্দিকী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

২০১০ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন অভিনেত্রী বাঁধন ও মাশরুর সিদ্দিকী।২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর তাদের বিচ্ছেদ হয়।বগত বছর অগাস্টে বাঁধন অভিযোগ করেন, তার স্বামী সন্তানকে নিয়ে গেছেন এবং জোরপূর্বক কানাডায় নিয়ে যেতে চাইছেন। তারই প্রেক্ষিতে সে বছর ৩ অগাস্ট আদালতের দ্বারস্থ হন বাঁধন।

রায়ের পর আদালত থেকে বেরিয়ে অভিনেত্রী বাঁধন সাংবাদিকদের বলেন, “মেয়ের অভিভাবকত্ব পাওয়ার জন্য গত নয় মাস আমি অনেক সংগ্রাম করেছি। মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছি। কিন্তু আজ আমি নিশ্চিন্ত। আদালত সাধারণ হেফাজত নয়, বরং মেয়ের সম্পূর্ণ গার্ডিয়ানশিপ আমাকে দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, “আমাদের বিয়ের দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় পাঁচ লাখ টাকা। আমি তা দাবি করিনি। মেয়ের কোনো ভরণপোষণের খরচ তার বাবা এতদিন দেননি। কোনো খোরপোষ দেননি। আমিও চাইনি। এসব কথা আজ আমি আদালতে বলেছি।

“বাবার কাছে ভরণপোষণ, এটা প্রত্যেক মেয়ের অধিকার, মেয়ের দেখাশোনা করা প্রত্যেক বাবার দায়িত্ব। এই কাজটা এতদিন আমিই করে এসেছি।”

বাঁধনের আইনজীবী দিলরুবা শরমিন এই রায়কে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে বলেন, “আমার জানা মতে, এই প্রথম মাকে গার্জিয়ানশিপ দেওয়া হলো এবং বাংলাদেশের আইন, স্টেট ল’, ইসলামী শরিয়াহ আইন সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে শিশুর সর্বোত্তম মঙ্গলের স্বার্থে একজন জজ কী পারেন তা তিনি দেখিয়ে দিলেন।

“আইন অনুযায়ী মা কাস্টডি পায় না শিশু সন্তানের, স্পেশালি কন্যা সন্তানের, কিন্তু উনি দিলেন গার্জিয়ানশিপ। আইন অনুযায়ী, বাবার অনুমতি নিয়ে বাইরে যেতে হয়, কিন্তু আদালতের কাছে এটা মনে হয়েছে, শুরু থেকেই বাবা কোনো ধরনের দায়িত্ব স্ত্রী বা সন্তানের প্রতি পালন করছে না। একজন মায়ের ব্যথা, বেদনা, আর্জি শুধু আইনগত না, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখেছেন।”

অভিভাবকত্ব আইন ও পারিবারিক আইন অনুযায়ী, সাধারণত চেলে সন্তানের ক্ষেত্রে ছয় বছর বয়স পর‌্যন্ত মায়ের অভিভাবকত্বে থাকার নিয়ম রয়েছে এবং আর মেয়ে সন্তান বয়ঃসন্ধি পর‌্যন্ত মায়ের হেফাজতে থাকতে পারে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে পিতা স্বাভাবিক অভিভাবক হলেও আদালত সন্তানের কল্যাণের জন্য যেকোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version