শিমুল অধিকারী সুমন, চাঁদপুর:
চাঁদপুরের মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল এখন ভ্রমণপিপাসু মানুষের প্রথম পছন্দে পরিণত হয়েছে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য, দিগন্তজোড়া নদী-আকাশ, সবুজ প্রান্তর আর শান্ত পরিবেশ উপভোগ করতে প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন স্থানসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে এখানে ভিড় করছেন শত শত পর্যটক।
২১ ডিসেম্বর (রবিবার) সরেজমিনে দেখা যায়, শীতের এই মৌসুমে মেঘনার বুকে জেগে ওঠা চরাঞ্চলগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। বিশেষ করে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী, নীলকমল ও গাজীপুর সংলগ্ন চর এলাকাগুলোতে সূর্যাস্তের দৃশ্য পর্যটকদের বিশেষভাবে মুগ্ধ করছে। নদীর ঢেউ, দূরে পাল তোলা নৌকার চলাচল আর চরজুড়ে বিস্তৃত বালুচর ও সবুজ ঘাসের সমাহার যেন প্রকৃতির এক জীবন্ত ক্যানভাস। শীতের আমেজ শুরু হতেই এখানে পিকনিক, ফটোগ্রাফি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে ভ্রমণের প্রবণতা কয়েক গুণ বেড়েছে।
ঘুরতে আসা পর্যটক মনিষা, মরিয়ম ও আয়েশা জানান, শহরের যান্ত্রিক কোলাহল আর ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পেতে তারা এখানে এসেছেন। তাদের মতে নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য মেঘনার চরাঞ্চলের বিকল্প নেই। স্বল্প খরচে নৌভ্রমণ আর খোলা প্রাকৃতিক পরিবেশ মনকে প্রশান্তি দেয়। এখানকার মানুষের আন্তরিকতা আমাদের ভ্রমণকে আরও আনন্দময় করে তুলেছে।”
পর্যটকদের এই আগমনে স্থানীয়দের মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার। স্থানীয় বাসিন্দা কালাম, সোহাগ ও ফারুক জানান, পর্যটনের কারণে এলাকায় ছোটখাটো ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে নৌযান চলাচল এবং খাবার দোকানগুলোতে বেচাকেনা বাড়ায় স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তবে তারা এই এলাকায় পর্যটন ব্যবস্থাপনা উন্নত করা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি প্রশাসনের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর মতে, পরিকল্পিত উদ্যোগ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে চাঁদপুরের এই চরাঞ্চলগুলো দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। এতে যেমন পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে, তেমনি স্থানীয় জীবনমান উন্নয়নেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সিএ/জেএইচ


