দিনাজপুরের কৃষকরা এখন আগাম শীতকালীন সবজি চাষ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সাধারণত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে এসব সবজি বাজারে ওঠে। তবে এবার কৃষকেরা মৌসুমের শুরুতেই, অর্থাৎ আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি সময়েই সবজি বাজারে তোলার পরিকল্পনা করেছেন। এর কারণ, মৌসুমের শুরুতে দাম ও চাহিদা বেশি থাকায় লাভের সম্ভাবনাও তুলনামূলক বেশি।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ বছর জেলার সব উপজেলাতেই কৃষকেরা আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত। সদর উপজেলার নশিপুর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম তার ৪৫ শতক জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি, বাঁধাকপি, কাঁঠালি বেগুন ও টমেটো চাষ করেছেন। তিনি জানান, অসময়ে বৃষ্টি মোকাবিলায় জমিতে বিশেষ ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে পানি জমে ফসলের ক্ষতি না হয়। তার আশা, আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি বাজারে সবজি তুলতে পারবেন এবং ভালো দাম পাবেন।
দানিহারি গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে খরচ ও পরিশ্রম দুটোই কমছে, কিন্তু লাভ বাড়ছে। ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়ও আগাম সবজি চাষ শুরু হয়েছে। এসব জমিতে শিম, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, করলা, লাউ ও লালশাকসহ নানা সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যা চলছে।
আলাদিপুর গ্রামের কৃষক হারুন মিয়া জানান, তিনি ৩০ শতক জমিতে আগাম ফুলকপি চাষ করেছেন। ১৫-২০ দিনের মধ্যে বাজারে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন। গত বছর একই জমি থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছিলেন তিনি। এবারও ভালো ফলনের প্রত্যাশা করছেন।
এছাড়া, সুজাপুর গ্রামের চাষি কেরামত আলী বলেন, মৌসুমের শুরুতে সবজি বাজারে তুলতে পারলে দাম বেশি পাওয়া যায়। ইতোমধ্যেই শিম, মুলা, লালশাক, পুঁইশাক, করলা, পালংশাক ও টমেটো বাজারে উঠছে এবং কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহানুর রহমান জানান, কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও রোগবালাই দমন নিয়ে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার ১৩টি উপজেলায় ২৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের সবজি চাষ হবে।
সিএ/এমআরএফ