চাঁদপুরের হাইমচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার মধ্যে দুই যাত্রীবাহী লঞ্চের ভয়াবহ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫ জন। বেপরোয়া গতি ও নৌ-চলাচল বিধি অমান্য করার অভিযোগে দুই লঞ্চের মাস্টার ও ড্রাইভারসহ ৮ জন নামীয় এবং আরও ১০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হাইমচর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর নদী বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) বাবু লাল বৈদ্য বাদী হয়ে এই মামলাটি করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকা সদরঘাট থেকে ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ‘এমভি এ্যাডভেঞ্চার-০৯’। অন্যদিকে ভোলার ঘোষেরহাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে ‘এমভি জাকির সম্রাট-০৩’। ২৬ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ২টার সময় হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নের মাঝেরচর এলাকায় পৌঁছালে ঘন কুয়াশার মধ্যে লঞ্চ দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় এ্যাডভেঞ্চার-০৯ লঞ্চটি জাকির সম্রাট-০৩ লঞ্চের মাঝ বরাবর সজোরে আঘাত করে।
দুর্ঘটনায় নিহত ৪ জনই এমভি জাকির সম্রাট-০৩ এর যাত্রী ছিলেন। তারা হলেন,মো. আব্দুল গনি (৩৮), লালমোহন, ভোলা।মো. সাজু (৪৫), লালমোহন, ভোলা।মোছা. রিনা (৩৫), লালমোহন, ভোলা।মো. হানিফ, চরফ্যাশন, ভোলা।
আহত ৫ জনের মধ্যে ৪ জনকে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে এবং ১ জনকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মামলার বাদী অভিযোগ করেন যে, ঘন কুয়াশায় নৌ-চলাচল বন্ধ বা নোঙর করে রাখার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও চালকরা তা অমান্য করে বেপরোয়া গতিতে লঞ্চ চালাচ্ছিলেন। এমনকি দুর্ঘটনার পর আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করেই লঞ্চ দুটি পালিয়ে যায়।
ঝালকাঠি থেকে এ্যাডভেঞ্চার-০৯ এর ৪ স্টাফকে (মিন্টু, সোহেল, মহিন ও মনিরুজ্জামান) আটক করেছে নৌ-পুলিশ।
এ্যাডভেঞ্চার-০৯ এর মাস্টার ফিরোজ খান এবং জাকির সম্রাট-০৩ এর মাস্টার মনিরুল ইসলামসহ মূল চালকরা পলাতক রয়েছেন।
লঞ্চ দুটির সময়সূচি ও পারমিট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া মেরিন কোর্টেও আলাদা মামলা করা হয়েছে।
হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাজমুল হাসান জানান, নৌ-নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শিমুল অধিকারী সুমন, চাঁদপুর
সিএ/জেএইচ


