টাইটানিক দুর্ঘটনায় নিহত ধনী যাত্রী ইসিডর স্ট্রাউসের মরদেহ থেকে উদ্ধার একটি স্বর্ণের পকেট ঘড়ি নিলামে রেকর্ড ১৭ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড (প্রায় সাড়ে ২৮ কোটি টাকা) দামে বিক্রি হয়েছে। এই ঘড়িটি এই ধরনের নিলামের জিনিসপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া রেকর্ড স্থাপন করেছে।
ইসিডর স্ট্রাউস এবং তার স্ত্রী আইডা ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল সাউদ্যাম্পটন থেকে নিউইয়র্কগামী টাইটানিকে ভ্রমণের সময় বরফখণ্ডে ধাক্কা খেয়ে ডুবে মারা যান। ওই ঘটনায় ১৫০০ জনেরও বেশি যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। দুর্ঘটনার কয়েক দিন পর আটলান্টিক মহাসাগর থেকে ইসিডর স্ট্রাউসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের সঙ্গে পাওয়া যায় ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের জুলেস জারগেনসেন পকেট ঘড়ি, যা চার প্রজন্ম ধরে স্ট্রাউস পরিবার সংরক্ষণে রেখেছিল।
শনিবার (২২ নভেম্বর) ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারের ডিভাইজেস শহরের হেনরি অলড্রিজ অ্যান্ড সন নিলাম ঘরে ঘড়িটি বিক্রি হয়। ঘড়ি নিলামের সময় টাইটানিকের লেটারহেডে লেখা আইডা স্ট্রাউসের একটি চিঠি ১ লাখ পাউন্ডে, যাত্রী তালিকা ১ লাখ ৪ হাজার পাউন্ডে এবং আরএমএস কারপাথিয়ার নাবিকদের দেওয়া একটি স্বর্ণপদক ৮৬ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়। মোট মিলিয়ে টাইটানিক সম্পর্কিত বিভিন্ন স্মারকের নিলামে প্রায় ৩০ লাখ পাউন্ড উঠেছে।
জার্মানিতে জন্ম নেওয়া ইসিডর স্ট্রাউস ছিলেন মার্কিন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং নিউইয়র্কের বিখ্যাত মেসিজ ডিপার্টমেন্ট স্টোরের সহ-মালিক। টাইটানিক ডুবির রাতে তার স্ত্রী আইডাকে লাইফবোটে উঠতে বলা হলেও তিনি স্বামীর পাশে থেকেই মৃত্যুবরণ করতে অস্বীকার করেছিলেন। আইডা স্ট্রাউসের মরদেহ আর কখনও পাওয়া যায়নি।
নিলামকারী অ্যান্ড্রু অলড্রিজ বলেন, “ঘড়িটির রেকর্ডমূল্য টাইটানিক নিয়ে মানুষের দীর্ঘস্থায়ী আগ্রহের প্রমাণ। প্রতিটি যাত্রী ও নাবিকের নিজস্ব গল্প ছিল, আর ১১৩ বছর পরও সেই গল্পগুলো স্মারকের মাধ্যমে বলা হয়ে থাকে।” তিনি আরও বলেন, “স্ট্রাউস দম্পতি টাইটানিকের ‘চূড়ান্ত প্রেমের গল্প’। ৪১ বছরের দাম্পত্যের পরও আইডা যে স্বামীকে ছেড়ে যেতে চাননি, ঘড়ির এই রেকর্ডমূল্য সেই সম্মানের প্রতিফলন।”
সূত্র: বিবিসি
সিএ/এমআরএফ


