শীতকালে শিশুদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। শীতে শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমে যায় এবং ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া সহজেই সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এছাড়া বছরের শেষের দিকে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিশু অধিক সময় বাড়িতেই থাকে। তাই তার খাবার, পোশাক, ত্বক এবং সার্বিক পরিচর্যার দিকে বাড়তি নজর দেওয়া প্রয়োজন।
১. শিশুর খাবারের যত্ন
শীতে শিশুর খাবারে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। কারণ শিশুদের হজমশক্তি বড়দের তুলনায় কম এবং বাইরের খাবার তাদের পেটে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই:
- বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন – রাস্তার খাবার, প্যাকেটজাত বা ফাস্ট ফুড দেওয়া উচিত নয়।
- ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার – শীতকালীন সবজি যেমন গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি এবং ফল যেমন কমলা, পেয়ারা, কলা নিয়মিত দেওয়া।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য – ডিম, মুরগি, মাছ শিশুর দৈনন্দিন খাবারে রাখুন।
- পর্যাপ্ত পানি ও শরবত – শীতে শিশুদের পানিশূন্যতার সম্ভাবনা থাকে। শুধু বিশুদ্ধ পানি নয়, ঘরে তৈরি শরবত বা নারিকেল পানি দিতে পারেন।
২. শিশুর পোশাক
শিশুর শীতকালীন পোশাক আরামের সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণ রাখতে হবে।
- উপযুক্ত মাপ – শিশুর দ্রুত বৃদ্ধি বিবেচনা করে বড় বা ছোট পোশাক না কেনা।
- উষ্ণ ও আরামদায়ক কাপড় – সুতি বা উলের মিশ্র কাপড় ব্যবহার করুন। এমন কাপড় নির্বাচন করুন যা সহজে চলাফেরার সুযোগ দেয়।
- পর্যাপ্ত স্তর – বিশেষ করে ছোট শিশুদের জন্য লেয়ারিং গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্বাস, সোয়েটার ও জামা কাপড় ঠিকভাবে পরুন।
৩. শিশুর ত্বকের যত্ন
শিশুর ত্বক কোমল এবং সংবেদনশীল, তাই শীতকালে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।
- শিশুর উপযোগী পণ্য – বড়দের জন্য ব্যবহৃত সাবান, লোশন শিশুর ত্বকে ব্যবহার করবেন না। শিশুর ত্বকের জন্য প্রস্তুত আলাদা প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন।
- গোসল ও ময়েশ্চারাইজার – গোসলের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি ত্বক শুষ্ক হওয়ারোধ করে।
- ভিটামিন ডি – প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকার ব্যবস্থা করুন। এতে শিশুর শরীরে ভিটামিন ডি প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়।
৪. অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়
- শরীরচর্চা ও খেলাধুলা – শিশুর জন্য পর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ নিশ্চিত করুন। শীতে ভেতরে খেলাধুলার আয়োজন করতে পারেন।
- হ্যান্ড হাইজিন ও নাসার যত্ন – শিশুর হাত ধোয়া, নাক মুছা ও মুখ ধোয়ার অভ্যাস নিয়মিত করুন।
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম – শিশুর ঘুম নিশ্চিত করতে নিয়মিত সময়সূচি মেনে চলুন।
শীতকালীন এই অতিরিক্ত যত্ন শিশুকে সংক্রমণ, ঠাণ্ডা ও শীতজনিত অসুখ থেকে রক্ষা করবে এবং শিশুর সুস্থ্য, সতেজ ও প্রাণবন্ত থাকা নিশ্চিত করবে।
সিএ/এমআর


