জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে প্রতিটি শরিক দলকে নিজ নিজ প্রতীকে ভোট করতে হবে—গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) এমন সংশোধনীতে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে ১২ দলীয় জোট। তারা বলেছে, এই পরিবর্তন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সীমিত করে এবং রাজনৈতিক দলের সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বরাবর লিখিত চিঠি দিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সিইসি দপ্তরে এ চিঠি জমা দেওয়া হয়।
১২ দলীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত দলগুলো হলো—বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় দল, বাংলাদেশ জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টি, ইসলামিক পার্টি, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল এবং ইউনাইটেড লিবারেল পার্টি।
চিঠিতে মোস্তফা জামাল হায়দার উল্লেখ করেন, আরপিওর অনুচ্ছেদ ২০ অনুযায়ী জোটের প্রার্থী হলেও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে নিজের দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে—এ বিধানটি রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অতীতে বহুবার বিভিন্ন রাজনৈতিক জোট নিজেদের বা শরিক দলের প্রতীক ব্যবহার করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং কোনো জটিলতা সৃষ্টি হয়নি। তিনি বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় এর আগে জোটগত নির্বাচনের এই বিধান পরিবর্তন করা হবে না বলে আশ্বস্ত করা হয়েছিল, কিন্তু হঠাৎ করে নতুন এই সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “জোট গঠনের মূল উদ্দেশ্য নির্বাচনে সফলতা অর্জন করা। সেই জোটের পছন্দ অনুযায়ী প্রতীক নির্বাচনের অধিকার থাকা উচিত। এতদিন ধরে এভাবেই নির্বাচন হয়ে আসছে এবং তাতে কোনো সমস্যা হয়নি। এখন হঠাৎ করে এই পরিবর্তন আনার কারণ অস্পষ্ট।”
চিঠিতে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছাড়াই এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য। ১২ দলীয় জোটের মতে, আরপিও সংশোধনীর এই ধারা রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার সীমিত করে দিয়েছে।
জোটের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়, আরপিওর অনুচ্ছেদ ২০-এ পূর্বের বিধান বহাল রাখা হোক এবং সংস্কারের নামে কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা যেন না চালানো হয়।
সিএ/এমআরএফ

                                    
