আজকাল স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের মধ্যে প্রোবায়োটিক যুক্ত দই বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দইতে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া শরীরের অন্ত্র থেকে শুরু করে সামগ্রিক সুস্থতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এক মাস ধরে প্রতিদিন নিয়মিত একটি বাটি দই খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে যে পরিবর্তনগুলো ঘটতে পারে, সেগুলো নিম্নরূপ।
১. হজম ব্যবস্থা উন্নত হয়
প্রোবায়োটিক যুক্ত দই হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। এতে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস এবং বিফিডোব্যাকটেরিয়াম অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, ফলে পেটের ফোলা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অস্বস্তি কমে আসে। নিয়মিত দই খেলে হজম প্রক্রিয়া আরও দ্রুত এবং কার্যকর হয়, যার ফলে পুষ্টি উপাদান শোষণও সহজ হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সুস্থ অন্ত্র মানেই পুরো শরীরের স্বাস্থ্য। দই খাওয়ার ফলে অন্ত্রের প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়, যা হজমের সঙ্গে সম্পর্কিত নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
২. ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত হয়
আন্ত্র এবং ত্বকের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। প্রোবায়োটিক দই অন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যবান রাখে। দইয়ে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং প্রোটিন ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, ফলে ত্বক নরম, মসৃণ এবং স্থিতিস্থাপক হয়। ব্রণ বা প্রদাহজনিত ত্বকজনিত সমস্যা কমে আসে। নিয়মিত দই খাওয়ার ফলে ত্বকের সংবেদনশীলতা কমে এবং ত্বকের সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়
একটি সুস্থ অন্ত্র সরাসরি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রোবায়োটিক দই শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। প্রতিদিন দই খাওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেখা যায়, সাধারণ সংক্রমণ, ঠান্ডা বা মৌসুমী শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমে আসে। প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টির মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়, যা দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতায় সহায়ক।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
দই খাওয়া ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়াগুলি খাদ্য হজমে সাহায্য করে এবং চর্বি জমার হার কমাতে ভূমিকা রাখে। নিয়মিত দই খেলে পেটের ফোলা কমে এবং পাচনতন্ত্রে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় থাকে।
৫. মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব
গবেষণায় দেখা গেছে, অন্ত্রের স্বাস্থ্য মস্তিষ্কের সাথে সরাসরি সংযুক্ত। প্রোবায়োটিক দই সেরোটোনিন হরমোনের উৎপাদনে সাহায্য করে, যা মানসিক চাপ কমাতে এবং মেজাজ ভালো রাখতে সহায়ক। এক মাস নিয়মিত দই খাওয়ার ফলে মানসিক চাপ কমে, ঘুমের মান উন্নত হয় এবং সামগ্রিক মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধি পায়।
৬. হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য
দইতে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি থাকে, যা হাড় ও দাঁতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত দই খেলে হাড় শক্তিশালী হয় এবং হাড়ের ঘনত্ব বজায় থাকে। এছাড়াও দাঁতের ক্ষয় রোধে দই কার্যকর।
সিএ/এমআর


 
                                    
