নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ক্ষতির মুখে পড়া পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এই প্রক্রিয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ তেমনভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংক খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।
একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় ব্যাংকের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের অনিয়ম এবং দুর্নীতির দায় বিনিয়োগকারীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই পাঁচ ব্যাংকের নিট সম্পদমূল্য ঋণাত্মক, যার কারণে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগের বিপরীতে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।
বিএসইসি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী নন। তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে ব্যালেন্স শিট, ঋণ, দায়ী ব্যক্তিদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি মূল্যায়ন করা হবে এবং একীভূতকরণের অনুপাত নির্ধারণে ন্যূনতম স্বার্থ রক্ষা করা হবে।
নতুন ব্যাংকটি প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন হবে এবং অনুমোদিত মূলধন ৪০ হাজার কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার প্রদান করবে এবং বাকি অংশ বেইল-ইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমানতকারীদের শেয়ারে রূপান্তর করা হবে। ব্যাংকগুলোর সকল দায়, সম্পদ ও জনবল নতুন ব্যাংকে অন্তর্ভুক্ত হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি আরও শক্তভাবে বিবেচনা করা উচিত। ব্যাংকগুলোর এনএভি ঋণাত্মক হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের কোনো ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, কিন্তু সরকারের উদ্যোগ থাকলে তাদের জন্য কিছু সংরক্ষণ করা সম্ভব।
সিএ/এমআর