দেশের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন এভিয়েশন প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইট এক্সপার্ট হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেছে। ওয়েবসাইট অকার্যকর হয়ে যাওয়ার পর রাজধানীর মতিঝিলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে ভিড় করেছেন শতাধিক গ্রাহক ও ট্রাভেল এজেন্সির প্রতিনিধি। এদের অধিকাংশই অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের জন্য অর্থ পরিশোধ করেছিলেন, কিন্তু এখন টিকিট বা টাকার কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না।
ফ্লাইট এক্সপার্টের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদ পরিবারসহ দেশ ছেড়ে গেছেন এবং প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে, এমডি সালমান দাবি করেছেন, প্রতিষ্ঠানটির দুই কর্মকর্তা তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, যার দায় থেকে নিজেকে রক্ষা করতেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কার্যালয়ে উপস্থিত অনেক ক্ষতিগ্রস্ত এজেন্সির মালিকের মধ্যে একজন কাঁদতে কাঁদতে বলেন,
“সব শেষ ভাই, আমার ২৫-৩০ লাখ টাকা নাই। আমি শেষ।”
২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করা ফ্লাইট এক্সপার্ট টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন, ট্যুর প্যাকেজ ও ভিসা প্রসেসিংসহ নানা সেবা দিত। তবে প্রতিষ্ঠানটি নিজে সরাসরি এয়ারলাইনস থেকে টিকিট সংগ্রহ না করে, দুটি মধ্যস্থতাকারী এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করত—এমন তথ্য সামনে এসেছে।
ফ্লাইট এক্সপার্টের হেড অব কমার্শিয়াল সাঈদ আহমেদ দাবি করেছেন, মালিকপক্ষই কোটি কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়েছেন এবং বহু গ্রাহক এখন টিকিট না পেয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সালমান বিন রশিদ হোয়াটসঅ্যাপে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, তিনি কাউকে ঠকাননি। বরং টিকিট কাটা ও তাৎক্ষণিক ইস্যুর কারণে গ্রাহকদের ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি সাঈদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন, তিনি সরবরাহকারীদের টিকিট রিফান্ড করতে বলেছেন এবং সেটিই সমস্যা তৈরি করেছে।
তবে মতিঝিল সিটি সেন্টার ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন, সালমান কয়েক দিন ধরে অফিসে অনুপস্থিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট ট্রাভেল এজেন্সিগুলো বড় প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভর করতে গিয়ে এ ধরনের ঝুঁকিতে পড়ছে। তারা বলছেন, এই ঘটনাটি অনলাইন ভ্রমণ খাতের নিয়ম ও নজরদারির ঘাটতি তুলে ধরছে।