যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল গার্ডের দুই সেনাকে গুলির ঘটনার পর অভিবাসন নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশ থেকেই আর অভিবাসী নেওয়া হবে না। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক মানুষ শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও নিরাপদ জীবনের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসিতে এক আফগান অভিবাসীর গুলিতে ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্য আহত হওয়ার পর পরিস্থিতি জটিল হয়। জানা গেছে, ওই ব্যক্তি আফগানিস্তান থেকে ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ব্যবস্থায় সেখানে পৌঁছেছিলেন। তিনি পূর্বে মার্কিন সেনাবাহিনী ও সিআইএর সঙ্গে সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর এমন হামলা প্রশাসনের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছে।
ঘটনার পর শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে দেওয়া এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা সুরক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তিনি দাবি করেন, ভুল অভিবাসন নীতির কারণে বহু আমেরিকান নাগরিক অনিরাপদ হয়ে পড়েছেন এবং দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ থেকে অভিবাসী আসা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তার বক্তব্যে তিনি আরও উল্লেখ করেন, জো বাইডেন সরকারের আমলে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা লাখ লাখ ব্যক্তির থাকার অনুমতি বাতিল করা হবে। যারা যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতি, আইন ও মূল্যবোধের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারে না বা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ, তাদের বহিষ্কার করা হবে। তিনি দাবি করেন, দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক নিরাপত্তা রক্ষায় এটি বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ।
ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, বিদেশি নাগরিকদের সরকারি সুবিধা সীমিত করে শুধুমাত্র আমেরিকান নাগরিকদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি মনে করেন, এই নীতি বাস্তবায়ন করলে যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধ প্রবণতা কমবে এবং দেশের নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় হবে। তার মতে, যারা দেশের প্রতি প্রকৃতভাবে অনুগত ও উপকারী নয়, তাদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, দেশের সার্বিক উন্নতি ও নিরাপত্তার জন্য অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দেন তিনি। এই পদক্ষেপ কতটা বাস্তবায়নযোগ্য এবং এর বৈশ্বিক প্রভাব কী হবে — তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে অভিবাসন নীতির এই কঠোর পরিবর্তন বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সিএ/এমআরএফ


