মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরুর নির্দেশ বিশ্বজুড়ে নতুন করে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ফিরে আসার পর ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ‘সমান ভিত্তিতে’ পরীক্ষা শুরু করবে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের ঠিক আগে এই ঘোষণা দেন। তিনি নিজেকে প্রায়ই “শান্তির প্রেসিডেন্ট” হিসেবে আখ্যা দিলেও তার এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
তবে ট্রাম্পের এই নির্দেশের অর্থ স্পষ্ট নয়। তিনি কি অস্ত্র ব্যবস্থার কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষা করতে বলেছেন, নাকি ১৯৯২ সালের পর থেকে বন্ধ থাকা পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ পুনরায় শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছেন—তা এখনও অনিশ্চিত।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মূলত ইরানের উদ্দেশে এক ধরনের রাজনৈতিক বার্তা। ইরান এই সিদ্ধান্তকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে তীব্র সমালোচনা করেছে।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, “পারমাণবিক অস্ত্রাগার সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, তা যাচাই করা জাতীয় নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।” তবে তিনি স্বীকার করেন, প্রেসিডেন্ট কী ধরনের পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে ট্রাম্পের ঘোষণার সময়টি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। রাশিয়া সম্প্রতি পারমাণবিক সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ও সমুদ্র ড্রোন পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে অনেকেই ‘শক্তি প্রদর্শনের প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে দেখছেন।
ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ লিখেছেন, “অন্যান্য দেশের পারমাণবিক পরীক্ষা কর্মসূচির কারণে আমি যুদ্ধ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি, যেন আমাদেরও সমান ভিত্তিতে পরীক্ষা শুরু করা হয়। প্রক্রিয়াটি অবিলম্বে শুরু হবে।”
তিনি আরও দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডার রয়েছে এবং এটি তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদে অর্জন করেছেন।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি)-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে রাশিয়ার কাছে ৫ হাজার ৪৮৯টি, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৫ হাজার ১৭৭টি এবং চীনের কাছে ৬০০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে।
সিএ/এমআর


 
                                    
