ইউরোপের ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণে কঠোর জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, ন্যাটো আক্রমণের নামে রাশিয়াকে নিয়ে যে প্রচারণা চালাচ্ছে, তা আসলে ‘অর্থহীন হিস্টেরিয়া’। একই সঙ্গে তার দাবি, সব ন্যাটো দেশই এখন রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করছে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সাগরপাড়ের শহর সোচিতে পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক এক ফোরামে পুতিন বলেন, “তারা (ন্যাটো) নিজেরাই বিশ্বাস করে না যে রাশিয়া ন্যাটোতে হামলা চালাবে। যদি বিশ্বাস করে, তাহলে তারা অবিশ্বাস্যভাবে অযোগ্য। আর যদি না বিশ্বাস করে, তাহলে তারা কেবল অসৎ।”
ইউরোপের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রবণতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পুতিন জানান, রাশিয়া পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং দ্রুতই কঠোর জবাব দেবে। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, “জার্মানিতে বলা হচ্ছে তাদের সেনাবাহিনী ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী হবে। খুব ভালো। আমরা সেটা শুনেছি এবং দেখছি এর মানে আসলে কী।”
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে মস্কো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক তলানিতে নেমেছে। এ সময় ইউরোপ প্রতিরক্ষা জোরদার করছে এবং সীমান্তবর্তী দেশগুলো আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। তবে রাশিয়া তা অস্বীকার করে বলছে, ইউরোপ ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সামরিক ব্যয় বাড়াতে চাইছে।
পুতিন অভিযোগ করেন, ইউরোপ ‘নিরন্তর উত্তেজনা বাড়াচ্ছে’, যার কারণে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি বলেন, “সব ন্যাটো দেশই এখন আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে এবং তারা আর তা লুকাচ্ছে না। গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ ও অস্ত্র পাঠানোর মাধ্যমে তারা বাস্তবে যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশংসা করে পুতিন জানান, সম্প্রতি আলাস্কায় বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার ভাষায়, “ট্রাম্প এমন একজন মানুষ, যিনি কথা শুনতে পারেন।”
তবে মস্কোর অবস্থান এখনও কঠোর— কিয়েভকে অবশ্যই ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার আশা ত্যাগ করতে হবে এবং কিছু ভূখণ্ড ছাড়তে হবে। এদিকে পুতিন সতর্ক করে বলেন, রাশিয়ার দখলে থাকা জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ইউক্রেন বিপজ্জনক খেলা খেলছে। তার ইঙ্গিত, এর জবাবে রাশিয়া ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন পারমাণবিক স্থাপনাতেও পাল্টা হামলা চালাতে পারে।
সিএ/এমআরএফ


