নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এমন এক ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ, যা দীর্ঘদিন স্মরণে থাকবে ব্যর্থতার প্রতীক হিসেবে। শেষ ৫ ওভারে হাতে ৭ উইকেট, প্রয়োজন মাত্র ২৭ রান—এই অবস্থায় এমন নাটকীয়ভাবে ম্যাচ হেরে যাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য। সোমবার (২০ অক্টোবর) নাভি মুম্বাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় ছাড়া উপায় ছিল না নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের, কিন্তু তারা দেখাল কীভাবে জয় নিশ্চিত থাকা অবস্থায়ও পরাজয় বরণ করা যায়।
লঙ্কানদের ২০২ রানের টার্গেট তাড়ায় নামা বাংলাদেশ পুরোনো ধীরগতির ক্রিকেটে শুরু করে। প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেটে মাত্র ২৩ রান আসে। এরপর ফারজানা হক পিংকি ৩৫ বলে ৭ রান করে আউট হলে ব্যাটিং চাপে পড়ে দল। সোবহানা মোস্তারিও দ্রুত বিদায় নেন। তবে জ্যোতি ও শারমিন সুপ্তা মিলে ৮২ রানের দারুণ জুটি গড়ে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন টাইগ্রেসদের। ঠিক তখনই দুর্ভাগ্য—ব্যক্তিগত ৬৪ রানে ক্র্যাম্পে আক্রান্ত হয়ে সুপ্তা মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন।
এরপর জ্যোতি ও স্বর্ণা আক্তারের জুটিতে আরও ৫০ রান আসে। জয় তখন একেবারে নাগালের মধ্যে। কিন্তু স্বর্ণার আউট হওয়ার পর যেন ধস নামে ব্যাটিং লাইনে। রিতু মনি বারবার ডট দেন, জ্যোতির ব্যাটেও রান আসছিল না। শেষ ১২ বলে দরকার ছিল ১২ রান, কিন্তু ৪৯তম ওভারে আসে মাত্র ৩ রান।
শেষ ওভারে ৯ রান দরকার, বল হাতে নেন লঙ্কান অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু। প্রথম বলেই রাবেয়া খান এলবিডব্লিউ, পরের বলে নাহিদা আক্তার রানআউট। তৃতীয় বলে ৭৭ রান করা জ্যোতি লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এরপর মারুফা আক্তারও এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন। এক রানেই শেষ হয় ৫ উইকেট!
শেষ বলে ব্যাট হাতে ফেরেন আহত সুপ্তা, কিন্তু তখন আর কিছুই করার ছিল না—১ বলে ৮ রান দরকার, বল ব্যাট ফাঁকি দিয়ে চলে যায় কিপারের গ্লাভসে। এক রানের ব্যবধানে লঙ্কানদের কাছে ৭ রানে পরাজিত হয় বাংলাদেশ।
এমন হারে প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশ দলের মানসিক দৃঢ়তা ও কৌশলগত প্রস্তুতি নিয়ে। কেন সেট ব্যাটাররাও ম্যাচ শেষ করতে পারেন না, কেন বারবার একই ভুলের পুনরাবৃত্তি—এর জবাব খুঁজতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেও শেষ পর্যন্ত টানা ৫ ম্যাচে হারের বৃত্তে ঘুরপাক খেতে হলো টাইগ্রেসদের।
সিএ/এমআর