রাতের খাবারের পর অনেকেই অন্তত এক টুকরা ডার্ক চকোলেট খেতে পছন্দ করেন। তবে অনেকেই জানেন না, এটি শুধু মিষ্টি স্বাদের জন্য নয়, শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার উপর গভীর প্রভাব ফেলে। যদিও ডার্ক চকোলেটকে তার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধি এবং কম চিনি থাকার কারণে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়, রাতে খাওয়ার ফলে শরীরের ওপর কিছু আশ্চর্যজনক সুবিধা এবং সম্ভাব্য অসুবিধাও হতে পারে।
১. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে মেরামত করে
ডার্ক চকোলেট ফ্ল্যাভোনয়েডে ভরপুর, যা প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। রাতে শরীর প্রাকৃতিকভাবে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় থাকে, এবং ডার্ক চকোলেটের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষ মেরামতের কাজকে আরও কার্যকর করতে পারে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং কোষের ক্ষয় কমাতে সহায়তা করে।
২. মেজাজ উন্নত করে
ডার্ক চকোলেট সেরোটোনিন এবং এন্ডোরফিন উৎপাদন উদ্দীপিত করে, যা ‘ফিল গুড’ রাসায়নিক হিসেবে কাজ করে। রাতে ঘুমানোর আগে এটি গ্রহণ করলে মন শান্ত থাকে, চাপ কমে এবং মানসিক শান্তি বৃদ্ধি পায়। এটি দীর্ঘমেয়াদে অবসাদ ও উৎকণ্ঠা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
৩. ক্যাফেইন ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে
ডার্ক চকোলেটে স্বাভাবিকভাবে ক্যাফেইন ও থিওব্রোমাইন থাকে, যা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। গাঢ়তর চকোলেটে ক্যাফেইনের মাত্রা বেশি থাকে। রাতে দেরিতে খাওয়ার ফলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে, বিশেষ করে যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তাদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ। ঘুমের মান বজায় রাখতে সন্ধ্যার আগে বা সীমিত পরিমাণে ডার্ক চকোলেট খাওয়াই ভালো।
৪. লেট-নাইট সুগার ক্রেভিং তৈরি হতে পারে
ডার্ক চকোলেটে মিল্ক চকোলেটের তুলনায় কম চিনি থাকে, তবে এটি রক্তের শর্করার মাত্রা অল্প সময়ের জন্য বাড়াতে পারে। এতে শরীর আবার খাদ্য গ্রহণ করতে চাইতে পারে, যা গভীর ঘুমের জন্য বাধা হতে পারে। যারা রাতে হালকা খাবার খায়, তারা সামান্য ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন, তবে বেশি খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।
৫. অ্যাসিডিটি বা অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে
ডার্ক চকোলেটে থাকা থিওব্রোমাইন খাদ্যনালীর পেশী শিথিল করতে পারে, যার ফলে অ্যাসিডিটি বা রিফ্লাক্স সমস্যা বাড়তে পারে। যারা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বা অ্যাসিডিটির ঝুঁকিতে আছেন, তারা রাতে ডার্ক চকোলেট খাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। সন্ধ্যার আগে বা খুব সামান্য পরিমাণে খাওয়া উচিৎ।
৬. মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে
ডার্ক চকোলেট ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ, যা স্নায়ু শিথিল করতে সহায়ক। রাতে এটি খেলে মানসিক চাপ কমে, মন শান্ত থাকে এবং ঘুমের পূর্বে দেহ ও মন প্রস্তুত হয়। এটি বিশেষভাবে স্ট্রেসযুক্ত দিনে উপকারী হতে পারে।
৭. হৃৎপিণ্ড ও রক্তচাপের জন্য সহায়ক
ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ ডার্ক চকোলেট রক্তনালী শিথিল করতে সাহায্য করে, ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এটি হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার জন্য সহায়ক। তবে এটি অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে ক্যালোরি বৃদ্ধি হতে পারে, তাই পরিমিত গ্রহণই উপকারী।
৮. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে
পরিমিত ডার্ক চকোলেট ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। রাতে সামান্য চকোলেট খেলে অতিরিক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। তবে বেশি খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে।
সিএ/এমআর


