বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমেছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার পশ্চিমা বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড ও ডব্লিউটিআই—উভয় ধরনের অপরিশোধিত তেলের দামই নিম্নমুখী ছিল। বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে সম্ভাব্য অগ্রগতির ইঙ্গিত এবং বৈশ্বিক সরবরাহ বাড়ার প্রত্যাশায় বাজারে চাপ তৈরি হয়েছে।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলার ৬৪ সেন্টে নেমে আসে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৫৬ ডলার ৭৪ সেন্টে দাঁড়ায়।
চলতি বছরে তেলের দামে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম এ পর্যন্ত প্রায় ১৯ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম প্রায় ২১ শতাংশ কমেছে। গত ১৬ ডিসেম্বর তেলের দাম পাঁচ বছরের মধ্যে প্রায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। পরবর্তী সময়ে সরবরাহ–সংকটের আশঙ্কায় কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও সামগ্রিকভাবে দাম নিম্নমুখীই রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধীরগতি তেলের চাহিদা কমিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন বাড়তে থাকায় আগামী বছর বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এসব কারণে ২০২০ সালের পর চলতি বছরেই তেলের দামে সবচেয়ে বড় পতনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এদিকে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির ইঙ্গিতও তেলের দামে প্রভাব ফেলছে। বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, শান্তিচুক্তি হলে রাশিয়ার তেল খাতে আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল বা প্রত্যাহার হতে পারে। এতে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ আরও বাড়বে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, নতুন বছরের আগেই যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। অন্যদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পররাষ্ট্রনীতি–বিষয়ক উপদেষ্টা মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বৈশ্বিক তেল মজুত বৃদ্ধি এবং শান্তি আলোচনায় সামান্য অগ্রগতির ইঙ্গিত—এই দুই কারণ মিলেই আপাতত তেলের দামে নেতিবাচক চাপ বজায় রাখছে।
সূত্র: রয়টার্স
সিএ/জেএইচ


