দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের চাপ আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। মাত্র এক বছরে খেলাপি ঋণ ৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের একই সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৬.৯৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট ঋণ বিতরণ হয়েছিল ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৫.৭৩ শতাংশ। জুনে খেলাপি ঋণ ছিল ৬ লাখ ৮ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা (৩৪.৪০%), আর মার্চে ২৪.১৩ শতাংশ।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সাম্প্রতিক সময়ে কঠোর নজরদারি ও নিয়মকানুন প্রয়োগ করায় ব্যাংকের প্রকৃত খেলাপি ঋণ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। পূর্বে যা ‘নিয়মিত’ হিসেবে দেখানো হতো, এখন তা মন্দ ঋণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে নানা প্রভাবে বিতরণ করা ঝুঁকিপূর্ণ ঋণগুলো এখন প্রকাশ হচ্ছে, ফলে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের প্রায় ৫০ শতাংশ খেলাপি। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সময় মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদরা অভিযোগ করছেন, তখনকার সরকারের ছত্রছায়ায় ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট ও বিদেশে পাচার হয়েছে।
সিএ/এমআরএফ


