মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার রায়কে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রায় দেওয়ার সময় আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচার সম্পন্ন করা হয়েছে এবং তারা পছন্দমতো আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ পাননি, যা গুরুতর মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। মামলার তৃতীয় আসামি, সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এইচআরডব্লিউয়ের এশিয়া বিষয়ক উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, যে কোনো বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক ন্যায্যবিচারের মানদণ্ড পূরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, হাসিনার প্রশাসনের অধীনে সংঘটিত হওয়া নির্যাতনের দায়ীদের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিশ্বাসযোগ্য বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্রনেতৃত্বাধীন আন্দোলন দমন করতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, মামলায় আসামিদের সাক্ষ্যগ্রহণ, পছন্দমতো আইনজীবী নিয়োগ এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগের ঘাটতি ছিল।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য বিবেচনা করে ‘ক্রাইমস অ্যাগেইনস্ট হিউম্যানিটি’ ধারার আওতায় বিচার করা হয়েছে। তবে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড যথাযথভাবে পূরণ হয়নি।
রায়ে হাসিনা ও কামালের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে অবশ্যই স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও ন্যায্য বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
সিএ/এমআরএফ


