জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, তাদের ব্যয় সংক্রান্ত সাম্প্রতিক অপপ্রচার সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক। একটি মহল দাবি করেছে, কমিশন আপ্যায়ন বাবদ ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে— যা কমিশনের ভাষায় “পরিকল্পিত প্রপাগান্ডা ও অসত্য প্রচার।”
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কমিশনের মোট বাজেট ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২৬ টাকা। এর মধ্যে ৩১ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১২৬ টাকা, যা বরাদ্দের মাত্র ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
আপ্যায়ন খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ৬৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৫ টাকা। এই অর্থের বড় অংশ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক ও আলোচনায় ব্যয় হয়েছে বলে কমিশন জানিয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ৪৪টি বৈঠকে আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় হয়েছে ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি দলের সঙ্গে ২৩টি সভায় ব্যয় হয়েছে ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকা। প্রতিদিনের গড় ব্যয় ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কম। তৃতীয় পর্যায়ের ৭টি বৈঠকে ব্যয় হয় ৭ লাখ ৮ হাজার ৬০০ টাকা।
এছাড়া কমিশনের ৫০টি অভ্যন্তরীণ সভায় ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৫২০ টাকা এবং বিভিন্ন সভা, সংবাদ সম্মেলন ও পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে ব্যয় হয় ২ লাখ ৩৪০ টাকা। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ১৩টি বৈঠকে আপ্যায়ন বাবদ খরচ হয় মাত্র ৩০ হাজার ৯৬০ টাকা— যেখানে বিশেষজ্ঞরা কোনো ভাতা বা সম্মানী নেননি।
বিদেশি কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতা, সম্পাদক ও সাংবাদিকদের আপ্যায়নে নয় মাসে ব্যয় হয়েছে আরও ২ লাখ টাকা।
কমিশনের মতে, এসব পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে ৮৩ কোটি টাকার দাবিটি সম্পূর্ণ মনগড়া। কমিশন জানিয়েছে, “এটি কেবল মিথ্যাচার নয়, বরং কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্টের সংগঠিত অপচেষ্টা।”
কমিশন দাবি করেছে, পুরো কার্যক্রমে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও সাধারণ সাংবাদিকরা নিয়মিতভাবে কমিশনের কার্যক্রম কাভার করার সুযোগ পেয়েছেন। সহসভাপতি ও সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করেছেন, এমনকি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকগুলোও সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে— যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
কমিশন আশা প্রকাশ করেছে, যেসব মহল এই প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে, তারা দ্রুত ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইবে। পাশাপাশি দায়িত্বশীল গণমাধ্যমগুলোকে সত্য তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে কমিশন।
সিএ/এমআরএফ


