অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি গঠিত এই কমিশন দেশের সার্বিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও আজ তাদের আনুষ্ঠানিক কার্যকাল শেষ হচ্ছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া সদস্য হিসেবে ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফররাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
প্রথমে কমিশনকে ছয় মাসের মেয়াদে প্রতিবেদন দাখিলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৫ আগস্ট। তবে কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়ায় সরকার প্রথমে এক মাস, পরে আরও এক মাস এবং সর্বশেষ ১৫ দিন মেয়াদ বাড়িয়ে আজ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেয়।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই কমিশন নির্বাচনব্যবস্থা, সংবিধান, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কার সংক্রান্ত বিভিন্ন কমিশনের প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করেছে। মূল লক্ষ্য ছিল জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সংস্কার রূপরেখা তৈরি করা।
কমিশনের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে ঐতিহাসিক ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’। এই দুটি নথি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ইতোমধ্যেই হস্তান্তর করা হয়েছে। জুলাই সনদে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করেছে, তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনো সই করেনি।
জুলাই সনদে সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থায় কাঠামোগত সংস্কার, প্রশাসনে জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে কঠোর নীতিমালা বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশন বিশ্বাস করে, এসব সংস্কার দীর্ঘমেয়াদে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক চর্চা শক্তিশালী করবে।
সিএ/এমআর


 
                                    
