সমুদ্রতীরের পাখি স্যান্ডপাইপার নিয়ে নির্মিত ছবি ‘পাইপার’ অস্কার পুরস্কার পেয়েছে- এ খবর আমরা কম বেশি সবাই জানি। কিন্তু অবাক করার মতো ব্যাপার, ছয় মিনিট ১৫ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের এই ছবিটি বানাতে তিন বছর লেগেছে, আর তাদের বাস্তব জীবন ফুটিয়ে তুলতে তিন বছর সৈকতে কাটিয়েছেন এর পরিচালক।
ছবিটিতে দেখা যায়, সমুদ্রতীরে বালুর বাসায় ভয়ে গুটিসুটি মেরে বসে আছে একটি স্যান্ডপাইপার পাখির ছানা। পাশে মা তাকে সাহস জোগাচ্ছে। খাবার খোঁজা শেখাচ্ছে। সমুদ্রের গর্জন আর ঢেউয়ের শব্দে ছানাটির ভীষণ ভয়! বাসা থেকে এক পা বের হয় তো দুই পা পিছিয়ে যায়। দূরেই সমুদ্রের পানি ছুঁয়ে খাবার খেয়ে বেড়াচ্ছে শত শত স্যান্ডপাইপার পাখি। ঢেউ এলে উড়ে গিয়ে আবার বসে পাখির দল। তাদের মনে ভয় নেই। ঢেউয়ের সঙ্গে তাদের বড় মিতালি।
কিন্তু এটা তো একদিনে হয়নি। যখন স্যান্ডপাইপারগুলো ছোট ছিল তখনো কি এভাবে ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঁচত পাখিগুলো? না, মা পাখিরা বাচ্চাদের পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করা শিখিয়ে দেয়। এ দৃশ্যগুলোই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পাইপার নামক ছয় মিনিটের একটি অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রে।
ছবিটি ২০১৬ সালের ১৭ জুন মুক্তি পায়। পরে ২০১৭ সালে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র হিসেবে ৮৯তম অ্যাকাডেমিক অ্যাওয়ার্ড (অস্কার) জিতে নেয়। একই সঙ্গে পূর্ণদৈর্ঘ্য অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র হিসেবে অস্কার জেতে ‘জুটোপিয়া’।
ছবিটি ছয় মিনিটের হলেও এর শুটিং করতে লেগেছিল তিন বছর! আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এমরিভিল সমুদ্রসৈকতে এর শুটিং করা হয়।
চলচ্চিত্রটির পরিচালক কানাডীয় বংশোদ্ভূত অ্যালান ব্যারিলারো জানান, বাস্তব পরিস্থিতি বোঝা ও ফুটিয়ে তোলার জন্য তিন বছর তিনি আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এমরিভিল সৈকতে অবস্থান করেন। সেখানে স্যান্ডপাইপার পাখির ওপর দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ করে ছবিটি নির্মাণ করেন তিনি।
স্যান্ডপাইপার পাখিরা বালুময় সৈকতে বাস করে। এসব পাখির কার্লিউ বা স্নাইপি নামেও ডাকা হয়। উত্তর আমেরিকান অঞ্চলে এসব পাখির বসবাস বেশি। এদের ডানা লম্বায় ৪৪-৪৭ সেন্টিমিটার হয়।