দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিখ্যাত কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ঐতিহাসিক উক্তি ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’-এর প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর বক্তব্যের পর থেকেই জনমনে নতুন করে কৌতূহল তৈরি হয়েছে—কে ছিলেন মার্টিন লুথার কিং?
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের প্রধান নেতা ও একজন ব্যাপটিস্ট ধর্মযাজক। ১৯২৯ সালের ১৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় এক ধর্মীয় পরিবারে তাঁর জন্ম। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছিল এবং কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠী নানাভাবে বৈষম্য ও দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছিল। এমন প্রেক্ষাপটে তিনি নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠেন।
১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত এক ঐতিহাসিক সমাবেশে তিনি দেন তাঁর বিখ্যাত ভাষণ ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’। ওই ভাষণে তিনি বলেন, তাঁর স্বপ্ন এমন একটি সমাজের, যেখানে মানুষকে গায়ের রঙ নয়, বরং চরিত্র ও যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। এই ভাষণ শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার আন্দোলনে গভীর প্রভাব ফেলে।
মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত মার্টিন লুথার কিং বিশ্বাস করতেন অহিংস আন্দোলনে। সহিংসতার পথ পরিহার করে তিনি কৃষ্ণাঙ্গদের ভোটাধিকার, সামাজিক মর্যাদা ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যান। তাঁর এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬৪ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, যা তাঁকে সে সময়ের সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ীতে পরিণত করে।
তবে ১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিস শহরের একটি হোটেলের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আততায়ীর গুলিতে তিনি নিহত হন। মৃত্যুর পরও তাঁর আদর্শ ও দর্শন বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার আন্দোলনের প্রেরণাস্বরূপ হয়ে আছে।
এদিকে মার্টিন লুথার কিংয়ের ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ উক্তির প্রসঙ্গ টেনে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, তিনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চান। তিনি বলেন, ‘আজ এই বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে আমি বলতে চাই—আই হ্যাভ আ প্ল্যান ফর দ্য পিপল অব মাই কান্ট্রি।’ দেশের উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
সিএ/জেএইচ


