মেঘনা নদীর রূপালী সম্পদে সমৃদ্ধ চাঁদপুরের হাইমচর। এই উপজেলার চরভৈরবী ইউনিয়ন মাছ ঘাট এখন দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কলকারখানার দূষণমুক্ত স্বচ্ছ মিঠা পানির প্রবাহ থাকায় এই অঞ্চলের মাছ স্বাদে যেমন অনন্য, চাহিদাতেও তেমনি শীর্ষে।
১৭ ডিসেম্বর বুধবার সরেজমিনে পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মাছঘাটে সকাল থেকেই জেলে, আড়তদার ও ক্রেতাদের ব্যস্ততা। টাটকা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মিঠাপানির মাছের সমাহার বাজারটিকে করে তুলেছে প্রাণবন্ত।
জসিম, সুলতান, লোকমান সহ আরো অনেকে জানান, চরভৈরবী সংলগ্ন মেঘনা নদীর এই অংশে কোনো শিল্প-কারখানা না থাকায় পানি অত্যন্ত বিশুদ্ধ। ফলে এখানকার মাছের প্রাকৃতিক বৃদ্ধি ও স্বাদ অন্য যেকোনো অঞ্চলের তুলনায় বেশি।

মশিউর, সাইফুর, আলিফ সহ আরো অনেকে ক্রেতাদের ভাষ্যমতে, এখানকার মাছের স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো, আর এই সুখ্যাতি এখন চাঁদপুর ছাড়িয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
স্বাদের কারণে এখানকার মাছের দাম বাজারের সাধারণ দরের চেয়ে কিছুটা বেশি। তবুও গুণগত মানের নিশ্চয়তা থাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি ও অনলাইন বিক্রেতারা প্রতিদিন এখানে ভিড় জমাচ্ছেন। অনলাইন উদ্যোক্তারা লাইভ স্ট্রিমিং বা ফেসবুকের মাধ্যমে তাজা মাছ সরাসরি সংগ্রহ করে পৌঁছে দিচ্ছেন দূর-দূরান্তের ভোজনরসিকদের কাছে।
মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও জাটকা নিধন রোধে প্রশাসনের কঠোর তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, নৌ-পুলিশের বিশেষ দল ঘাটে এবং নদীতে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ব্যবহার রোধ এবং সরকারি মৎস্য অভিযান সফল করতে পুলিশি নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

নীলকমল নৌপুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত ইনচার্জ কংকন কুমার বিশ্বাস জানান,”মৎস্য সম্পদ রক্ষায় আমরা ২৪ ঘণ্টা সতর্ক আছি। কারেন্ট জাল বা অবৈধ উপায়ে মাছ ধরা বন্ধে আমাদের অভিযান নিয়মিত চলছে যাতে মাছের এই প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য সুরক্ষিত থাকে।”
চরভৈরবী ঘাটের এই পরিচিতি স্থানীয় জেলে ও ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। সঠিক বিপণন ও সরকারি সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এই ঘাটটি দেশের মৎস্য খাতের অর্থনীতিতে আরও বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শিমুল অধিকারী সুমন, চাঁদপুর
সিএ/টিআর


