রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় শেখ রেহানাকে সাত বছর ও তার মেয়ে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ রায়ের পর ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বার্তাসংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, লেবার পার্টি জানিয়েছে—টিউলিপ সিদ্দিকের মামলায় ন্যায্য আইনি প্রক্রিয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিস্তারিতও কখনো জানানো হয়নি। এ কারণেই তারা এ রায়কে স্বীকৃতি দিতে পারছে না।
রায়ের পর ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক দ্য গার্ডিয়ানকে জানান, তিনি আশা করেন এই রায়কে যথাযথ অবজ্ঞার সঙ্গে দেখা হবে। তিনি এই পুরো প্রক্রিয়াকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রহসনমূলক বলে মন্তব্য করেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও জানান, এই তথাকথিত ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’-এর রায় যেমন অনুমেয় ছিল, তেমনই এটি অন্যায়। আমি আশা করি এই তথাকথিত রায়কে অবজ্ঞার সঙ্গে দেখা হবে, যা এর প্রাপ্য। আমার মনোযোগ সবসময় আমার হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেটের দিকেই ছিল এবং আমি বাংলাদেশের এই নোংরা রাজনীতিতে মনোযোগ দিতে চাচ্ছি না।
এর আগে সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এই রায় ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের আদালতে প্রথমবারের মতো কোনো ব্রিটিশ এমপির সাজা ঘোষণার ঘটনা এটি।
গত ২৭ নভেম্বর প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় শেখ হাসিনার ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকেও এক মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজকের মামলার রায়ে নতুন করে সাজাপ্রাপ্ত হলেন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক।
দেশে ফেরানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে দুদক
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মুহাম্মদ মইনুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এ রায় আমাদের প্রত্যাশামতো হয়নি। আমরা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আবেদন করেছিলাম। এ বিষয়ে দুদকের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, টিউলিপ বাংলাদেশের ও যুক্তরাজ্যের নাগরিক—যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সাজার বিষয়টি অবহিত করা হবে এবং আইনগত প্রক্রিয়ায় দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
পিপি আরও বলেন, টিউলিপ কখনো ফোন কল, আবার কখনো অ্যাপস ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে প্লট বরাদ্দের জন্য চাপ প্রয়োগ করেছেন—প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মচারীরা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমরা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি, তবে প্রত্যাশিত সাজা হয়নি।
সূত্র: এপি
সিএ/ইরি


