হাইওয়ে পুলিশের নজরদারিতে আধুনিক প্রযুক্তির বড় পরিবর্তন আসছে। দেশের সড়ক নিরাপত্তা বাড়াতে ধাপে ধাপে হাইওয়েতে বসানো হচ্ছে ১৪০০টি আধুনিক ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা শুধু গতি পরিমাপক নয়, বরং সড়কে সংঘটিত যেকোনো অনিয়ম রিয়েল-টাইমে শনাক্ত করবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার প্রমাণ সংগ্রহ করবে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়নে সড়ক নিরাপত্তা আইন : বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য জানান হাইওয়ে পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ দেশের প্রধান হাইওয়েতে স্থাপিত ক্যামেরাগুলো ওভার স্পিড, সিগন্যাল ভায়োলেশন, উল্টোপথে চলাচলসহ যেকোনো সড়ক আইন লঙ্ঘন শনাক্ত করবে। তারপর সেই অপরাধের তথ্য ডিজিটালি ফাইল হয়ে গাড়ির মালিকের মোবাইলে পৌঁছে যাবে।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান জানান, কয়েক মাসের মধ্যেই জরিমানার পুরো প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে গাড়ির মালিকের মোবাইল নম্বরে পাঠানো হবে। কোথায়, কোন তারিখে এবং কী কারণে জরিমানা করা হয়েছে—সব তথ্য সুনির্দিষ্টভাবে জানানো হবে এবং নির্দিষ্ট ব্যাংকে অনলাইনেই জরিমানা পরিশোধ করতে হবে। আদালতের প্রয়োজনে ক্যামেরার ভিডিও ও টাইম-স্ট্যাম্পড ডেটা ডিজিটাল এভিডেন্স হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে, যা মামলার ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন আর পুলিশের হাতে ধরে ফাইন দেওয়ার দিন শেষ। নতুন এই প্রযুক্তি সড়কে স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও আইন মেনে চলার সংস্কৃতি তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখবে। শুধু যানবাহনের গতি নয়, ক্যামেরাগুলো সন্দেহজনক আচরণ, জনসমাগমজনিত ঝুঁকি ও অপরাধমূলক কার্যকলাপও শনাক্ত করতে সক্ষম—যা সড়ক নিরাপত্তায় নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে।
হাইওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, ঢাকা–চট্টগ্রাম বৃত্তের বাইরেও ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ হাইওয়েকে ডিজিটাল মনিটরিং নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হচ্ছে, যা তার ভাষায় “হাইওয়ের প্রায় প্রতি ইঞ্চি কভার করছে।” এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো এবং নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সিএ/ইরি


