হংকংয়ের একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৯৪ জনে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৬ জন, যার মধ্যে ১১ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীও রয়েছেন। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) ভোরে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস এই তথ্য জানিয়েছে।
আগুন কমপ্লেক্সটির আটটি ব্লকে ছড়িয়ে পড়ে। বাঁশের মাচা ও দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায় এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্বলতে থাকে। মৃতদের মধ্যে একজন ৩৭ বছর বয়সী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীও রয়েছেন।
বর্তমানে আগুন প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে ভবনগুলো ভষ্মীভূত হয়ে গেছে। যারা এখনও নিখোঁজ, তাদের খুঁজে বের করতে পুড়ে যাওয়া ভবনগুলোর ভেতরে উদ্ধার অভিযান চলছে।
হংকং কর্তৃপক্ষ অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। বিশেষ করে নির্মাণ কাজের সময় ব্যবহৃত বাঁশের মাচা এবং প্লাস্টিকের জালের সম্ভাব্য ভূমিকা তদন্তের আওতায় রয়েছে। হংকংয়ের দুর্নীতি দমন সংস্থা জানিয়েছে, কমপ্লেক্সের সংস্কারকাজ সম্পর্কিত তদন্তও তারা শুরু করেছে। এর আগে পুলিশ জানিয়েছিল, আগুনের স্থানে অসাবধানতাবশত ফোমের প্যাকেজিং ফেলে রাখার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগুনের বিষয়ে কোনও সতর্ক সংকেত পাননি। তারা প্রতিবেশীদের সতর্ক করতে দরজায় দরজায় গিয়ে খবর দিয়েছেন। সুইন নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। আমি দেখলাম একটি মাত্র হোস পাইপ দিয়ে কয়েকটি ভবন বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল, যা খুব ধীর।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ডোরবেল বাজানো, দরজায় নক, প্রতিবেশীদের সতর্ক করা—এভাবেই আমরা মানুষদের বের হওয়ার চেষ্টা করেছি।’’
অগ্নিকাণ্ডের সময় স্থানীয় বাসিন্দা ও দমকলকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন। একটি সহায়তা কেন্দ্র চালু করেছেন ৩৮ বছর বয়সী স্টোন নামের ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘‘হংকংবাসীর মানসিকতা সত্যিই প্রশংসনীয়। বিপদে একজন থাকলে সবাই এগিয়ে আসে।’’
সূত্র: বিবিসি, এএফপি
সিএ/এমআরএফ


