রাজধানীর পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টা ২৩ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন। পুতুল ও জয়ের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলায় এই কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে শেখ হাসিনাকে এই মামলাসহ মোট তিন মামলায় সাত বছর করে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গত ২৩ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করা হয়েছিল। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্কে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন দাবি করেছিল। তবে পলাতক থাকায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। মামলাগুলোর মধ্যে একটিতে শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, আরেকটিতে জয় ও শেখ হাসিনাসহ ১৭ জন এবং অপর মামলায় পুতুল ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন আসামি ছিলেন।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে দুর্নীতি দমন কমিশন পৃথক ৬টি মামলা করে। এসব মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত ৩১ জুলাই শেখ হাসিনাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে শেখ হাসিনা এবং তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর সড়কের একাধিক প্লট নিজেদের নামে বরাদ্দ নেন। বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্যতা না থাকলেও অসৎ উদ্দেশ্যে নিজেদের গরিব দেখিয়ে প্লট গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
জয় ও পুতুলের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, জয়ের নামে রাজধানীতে বাড়ি-ফ্ল্যাট থাকা সত্ত্বেও তিনি তা হলফনামায় গোপন করেন এবং আইন লঙ্ঘন করে মাকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন। পরে রেজিস্ট্রি করে সরকারি জমি আত্মসাৎ করেন। একইভাবে পুতুল কোনো আবেদন না করেই তার মাকে দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে প্লট বরাদ্দ নেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে অভিযুক্ত করা হয় নথি গায়েব করার অভিযোগে।
এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় জুলাই আন্দোলন দমনের মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর আগে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সাবেক সরকারপ্রধান বেগম খালেদা জিয়াও দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, যদিও সম্প্রতি আপিল বিভাগ তাকে খালাস দেন। একইভাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির মামলায় শাস্তির রায় হয়েছিল।
সিএ/এমআরএফ


