মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবকে সামরিক জোট ন্যাটোর বাইরে “প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র” হিসেবে ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে এক বৈঠক ও ডিনারের সময় ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। এটি দুই দেশের মধ্যে নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপ হিসেবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি আরবকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, “এটি সৌদি আরবের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করবে।” এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের যৌথ অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতি অনুযায়ী, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ওয়াশিংটন সফরের সময় দুই দেশ বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি, প্রতিরক্ষা খাত এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একাধিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে রয়েছে যৌথভাবে পারমাণবিক শক্তি ব্যবস্থাপনা, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বিনিময় এবং প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কৌশলগত সহযোগিতা। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি সংক্রান্ত যৌথ ঘোষণা ভবিষ্যতে বিলিয়ন ডলারের সহযোগিতার আইনি ভিত্তি তৈরি করবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে নেওয়া পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবকে এফ-৩৫ লাইটনিং যুদ্ধবিমানসহ বিভিন্ন উন্নত সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহের অনুমোদন। হোয়াইট হাউস বলেছে, এই সামরিক সহযোগিতা পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধের আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বাস্তবায়ন করা হবে। এ ধরনের সহযোগিতা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা অবস্থান শক্তিশালী করবে এবং সৌদি আরবকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি আরবকে প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র হিসেবে ঘোষণা করা মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক ও কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি তেলের বাজার, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতের ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এটি দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচন করেছে এবং প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে ভবিষ্যত সহযোগিতার পথ সুগম করবে।
সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
সিএ/এমআরএফ


