গত সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজারে বড় দরপতন দেখা গেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট ৩৮৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭টির, কমেছে ৩৬৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩টির। লেনদেন হয়নি ৩০টির। দরবৃদ্ধির চেয়ে কমে যাওয়া সিকিউরিটিজের সংখ্যা ২১ গুণ বেশি হওয়ায় এক সপ্তাহে এক্সচেঞ্জের সবগুলো মূল্যসূচক প্রায় ৫ থেকে ৬ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহের ব্যবধানে ২৬৫ পয়েন্ট বা ৫.৩৪ শতাংশ কমে ৪ হাজার ৭০৩ পয়েন্টে নেমেছে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ ৮৯ পয়েন্ট বা ৪.৬০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএসও ৬২ পয়েন্ট বা ৫.৯৯ শতাংশ কমে ৯৭৭ পয়েন্টে নেমেছে।
ব্রোকারেজ হাউস ইবিএল সিকিউরিটিজ জানায়, ইসলামী ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, রেনাটা পিএলসি ও ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার সবচেয়ে বেশি পতনে অবদান রেখেছে। ডিএসইর দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে প্রায় ২৬.৮৫ শতাংশ, যা ৩৫৪ কোটি ৩৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বাজার মূলধন সপ্তাহের ব্যবধানে ১৬ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকায়।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পতনের পেছনে নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মধ্যে পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারের দাম শূন্য ঘোষণা, বিএসইসির নতুন মার্জিন ঋণ সংক্রান্ত বিধান এবং নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ‘লকডাউন’ উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে লকডাউন ও মার্জিন ঋণ আতঙ্কে শেষ দিনে ব্রোকারেজ হাউজে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি কমে গিয়েছে এবং কম দামে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা দেখা গেছে।
খাতভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে প্রকৌশল খাতের শেয়ার লেনদেনের মধ্যে ১৪.১৪ শতাংশ দখল করেছে। এর পরের অবস্থানে ওষুধ ও রসায়ন খাত (১৩.৩৪%), বস্ত্র খাত (৯.৯৯%), ব্যাংক খাত (৮.৭৩%) এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত (৮.৩৩%) রয়েছে। সব খাতেই নেতিবাচক রিটার্ন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ১৮.৪ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন জীবন বীমা খাতে, এর পর কাগজ ও মুদ্রণ খাত ১৭%, পাট খাত ১৫.৩%, মিউচুয়াল ফান্ড খাত ১২.৮৭% এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাত ১১.৪২% নেতিবাচক রিটার্ন দেখিয়েছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই সপ্তাহের ব্যবধানে ৩.৯৯% কমে ১৩ হাজার ৪০১ পয়েন্টে, আর সিএসসিএক্স সূচক ৩.৪৪% কমে ৮ হাজার ৩১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৭২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৯টির, কমেছে ২৩৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৭টির।
সিএ/এমআরএফ


