দেশের মাটিতে টেস্টে রেকর্ড সংগ্রহ গড়ে নিজেদের দাপটের আরেকটি দিন পার করল বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলমান একমাত্র টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সফরকারী আয়ারল্যান্ডকে কোণঠাসা করে দিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
বাংলাদেশ ১৪১ ওভারে ৮ উইকেটে ৫৮৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে, যা টেস্ট ইতিহাসে দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ ও নিজেদের মাঠে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এর আগে বাংলাদেশ কখনও সিলেটে পাঁচশো রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ড করেছিল ২৮৬ রান। ফলে ৩০১ রানের বিশাল লিড পায় স্বাগতিকরা।
তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ভয়াবহ শুরু হয়েছে আইরিশদের। ২৪ রানের মধ্যেই তারা হারায় ৪ উইকেট। দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৮৬ রান, এখনো পিছিয়ে ২১৫ রানে। ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে আছেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন (৪*) ও নাইটওয়াচম্যান ম্যাথু হামফ্রেস (০*)।
দিনের শুরুতে বাংলাদেশ ইনিংসের বাকি অংশে রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ২৮৬ বল খেলে ১৪ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ১৭১ রান—যা তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। অধিনায়ক শান্তও খেলেন ১০০ রানের দারুণ ইনিংস। এছাড়া মুমিনুল হক (৮২), সাদমান ইসলাম (৬৫) ও লিটন দাস (৬০) দলের সংগ্রহ সমৃদ্ধ করেন। ব্যাটিংয়ের এই ধারাবাহিকতাই বাংলাদেশকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টেস্টে টপ অর্ডারের চার ব্যাটারের ফিফটির অনন্য রেকর্ড এনে দেয়।
দিনের প্রথম সেশনেই আয়ারল্যান্ডের জন্য সবকিছু উল্টে যায়। দ্বিতীয় দিনের শেষে ১ উইকেটে ৩৩৮ রানে থাকা বাংলাদেশ সকালে নতুন বলে প্রথম আঘাত খায় ব্যারি ম্যাককার্থির বলে। ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির পথে থাকা জয় উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ভাঙে ১৭৩ রানের জুটি। পরের ওভারেই একই বোলারের শিকার হন মুমিনুল। এরপর মুশফিকুর রহিম মাত্র ২৩ রানে ফিরে গেলে কিছুটা ধস নামলেও শান্ত ও লিটনের ১০৭ বলের ৯৮ রানের জুটি আবারও দলকে দৃঢ় করে।
ফিফটির পর আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে লিটন আউট হলে শান্ত সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১১২ বল মোকাবিলায়। তবে শতক হাঁকানোর পরপরই এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। বাকি ব্যাটারদের মধ্যে মেহেদী হাসান মিরাজ ১৭ রান করে ফিরলে ইনিংস ঘোষণা করেন শান্ত।
আয়ারল্যান্ডের ইনিংসে শুরুতেই তাণ্ডব চালান নাহিদ রানা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে কেড কারমাইকেলকে (৫) বোল্ড করে প্রথম সাফল্য এনে দেন তিনি। এরপর তাইজুল ইসলাম ১৮ রানে হ্যারি টেক্টরকে এলবিডব্লিউ করেন। কুর্টিস ক্যাম্ফার (৫) ও লরকান টাকার (৯) টানা দুই ওভারে তুলে নেন তরুণ স্পিনার হাসান মুরাদ।
শেষ বিকেলে ম্যাকব্রাইন ও হামফ্রেস রক্ষণাত্মক ব্যাটিংয়ে দিনের খেলা টেনে নেন। তবে চতুর্থ দিনে বাংলাদেশি বোলাররা আবারও উইকেটের খোঁজে নামবেন এবং ম্যাচটি ইনিংস ব্যবধানে জয়ের হাতছানি দিচ্ছে শান্তর দলকে।
সিএ/এমআরএফ


