রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করার প্রত্যাশা প্রকাশ করেছেন প্রসিকিউশন।
সোমবার (১০ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তিনি জানান, “এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আজ ১২ নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আমরা আশা করি ৩০–৩৫ জনের জবানবন্দি নিয়েই দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে। নির্বাচনের আগে বা পরে রায় কখন হবে, তা আমাদের বলতে পারি না, তবে জানুয়ারি মাসের মধ্যে বিচার সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশা করছি।”

সাক্ষীর উপস্থিতি না থাকার কারণে কয়েকবার সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানো হয়েছে। প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, “আমাদের একজন সাক্ষী অসুস্থ ছিলেন, এছাড়া অন্যান্য মামলার তদন্তে তদন্ত কর্মকর্তারা ব্যস্ত ছিলেন। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া; এর কারণে মামলা বিলম্ব হচ্ছে এমন কোনো ধারণা ভুল। দ্রুততম সময়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে।”
এদিন ট্রাইব্যুনালে ১২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে হাজির হন বেরোবির শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান। তিনি জানান, তিনি আহত অবস্থায় আবু সাঈদকে রিকশায় তুলে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করেন হত্যাকাণ্ডের জন্য। এছাড়া পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় এবং বেরোবির কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর নামও উল্লেখ করেন। সাক্ষী দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও গাফিলতির কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
বেলা সাড়ে ১১টায় ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শুরু হয়। জবানবন্দি রেকর্ড করেন ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তার জেরা চলমান থাকে। বিরতির পর দুপুর আড়াইটার দিকে পুনরায় কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মঈনুল করিম, সহিদুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।
এ মামলা ৬ আগস্ট ফর্মাল চার্জ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। গত ২৭ আগস্ট চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছয় আসামিকে—এএসআই আমির হোসেন, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। তবে ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন, তাদের জন্য সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে।
সিএ/এমআরএফ


