দীর্ঘ ২৩ বছর পর দেশে ফিরতে যাচ্ছেন নব্বইয়ের দশকের আলোচিত ছাত্রনেতা ও বরিশাল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি। কানাডায় দীর্ঘ নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে তিনি আগামী নভেম্বরে দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন। তার এই ফেরাকে ঘিরে এলাকায় জোরালো হয়েছে নির্বাচনী গুঞ্জন—তিনি কি আবারও রাজনীতির মাঠে ফিরছেন?
গোলাম ফারুক অভি ছিলেন নব্বইয়ের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী হিসেবে বরিশাল-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। সে সময় তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও একাধিক মামলার কারণে ২০০২ সালে দেশ ছাড়েন অভি এবং কানাডায় স্থায়ী হন।
আলোচিত মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলাসহ রাজনৈতিক একাধিক মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। এই কারণে দুই দশকেরও বেশি সময় কানাডায় ছিলেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিন্নি হত্যা মামলা থেকে খালাস পাওয়ার পর থেকেই তার দেশে ফেরার আলোচনা শুরু হয়।
গোলাম ফারুক অভির স্বজন ও উজিরপুরের ধামুরা এলাকার বাসিন্দা পনির হাওলাদার বলেন, অভি দেশে ফিরবেন, এটা নিশ্চিত। স্থানীয়ভাবে অনেকে ধারণা করছেন, তিনি হয় বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী, নয়তো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।
তবে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যে এ বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। তারা মনে করেন, দীর্ঘদিন বিদেশে থাকায় অভির রাজনৈতিক প্রভাব কমে গেছে। বরিশাল দক্ষিণ জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান সুমন বলেন, গত ১৭ বছর বিএনপি নেতাকর্মীরা সরকারের দমননীতির শিকার হয়েছেন, জেল খেটেছেন। আর অভি বিদেশে রাজকীয় জীবন কাটিয়েছেন। তাই তার ফেরা নিয়ে তেমন প্রত্যাশা নেই।
অন্যদিকে উজিরপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম সরদার বলেন, গোলাম ফারুক অভি এই জনপদের একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি। তিনি যদি প্রার্থী হন, তবে নির্বাচনের সমীকরণ বদলে যেতে পারে।
বরিশাল-২ আসনে ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনায় রয়েছেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু, কাজী দুলাল হোসেন, কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু ও সাবেক ছাত্রদল নেতা সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
বিএনপির সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু বলেন, অভি ভাই দেশের সন্তান। তিনি ফিরছেন, এটা ইতিবাচক। তবে রাজনীতিতে জনগণের ভালোবাসা ও দায়িত্বশীল আচরণই এখন গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী আব্দুল মান্নান বলেন, গোলাম ফারুক অভি ফিরলেও তা নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাব ফেলবে না। আমাদের দল সংগঠিত এবং প্রস্তুত।
সিএ/এমআর


