কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর অপব্যবহার এখন একটি বৈশ্বিক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এআইকে অস্ত্র বা যন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, “একজন ডাক্তার যেমন এটি ব্যবহার করতে পারেন, তেমনি একজন ছিনতাইকারীও ব্যবহার করতে পারে।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এআইয়ের অপব্যবহার রোধে নির্বাচন কমিশন একটি কেন্দ্রীয় সেল গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশন আয়োজিত ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এআই অপব্যবহার প্রতিরোধ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “আমরা সবাই মিলে একত্রে চিন্তা করলে আরও ভালো কিছু বেরিয়ে আসবে। এই কর্মশালাটি একটি সুনির্দিষ্ট সমাধান বের করার সুযোগ।” সিইসি বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এআই অপব্যবহার মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী অবকাঠামো গড়তে হবে।
সিইসি বলেন, “আমি শুধু নীতিগত নির্দেশিকা নয়, বরং বাস্তবায়নযোগ্য খুঁটিনাটি জানতে চাই। কর্মশালা থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ আশা করছি।”
২৪ ঘণ্টার নজরদারি ও ফ্যাক্ট চেকিং
সিইসি জোর দিয়ে বলেন, “নির্বাচন চলাকালীন সময়ে, বিশেষ করে গভীর রাতেও বহু কিছু ঘটে যেতে পারে। তাই ভুল বা মিথ্যা তথ্যের দ্রুত মোকাবিলায় গঠিত সেলকে ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ফ্যাক্ট চেকিংয়ের পদ্ধতি কেমন হবে, কত দ্রুত তথ্য যাচাই করা যাবে, এবং কোন সংস্থাকে এতে যুক্ত করা হবে—এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সমাধান প্রয়োজন।” ফ্যাক্ট চেকিংয়ের জন্য কতজন কর্মী লাগবে, তাদের যোগ্যতা ও দায়িত্ব কী হবে, তাও নির্ধারণ করতে হবে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের সংযোগ স্থাপন
সিইসি পাহাড়ি ও দুর্গম অঞ্চলের তথ্যপ্রবাহ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “পাহাড়ের দুর্গম এলাকা বা সমুদ্র উপকূলের অফশোর দ্বীপগুলো থেকে মিথ্যা তথ্য আসতে পারে। এই তথ্যের কাছে পৌঁছানো ও তা মোকাবিলার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সেলের কার্যকর সংযোগ স্থাপন জরুরি।”
তিনি আরও জানান, “প্রতি শিফটে কতজন কর্মী দরকার, তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা কেমন হবে—এসব বিষয়ে স্পষ্ট সুপারিশ দিতে হবে।”
স্থানীয় সংযোগ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, “প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারা আমাদের হয়ে কাজ করবে এবং মিথ্যা তথ্যের বিষয়ে কীভাবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে—এসব খুঁটিনাটি বিষয়ও নির্ধারণ করতে হবে।”
সিইসি আশা প্রকাশ করেন, এই কর্মশালা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এআইয়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।
সিএ/এমআর