গ্রিনল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নিযুক্ত বিশেষ দূত জেফ ল্যান্ড্রি বলেছেন, দ্বীপটি দখল করার কোনো উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের নেই। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে চায় ওয়াশিংটন।
মঙ্গলবার ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ল্যান্ড্রি বলেন, গ্রিনল্যান্ডের জনগণের সঙ্গে আলোচনা করা জরুরি, যাতে বোঝা যায় তারা সামনে এগোতে কী চায়। তিনি বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করতেই হবে এটা বুঝতে যে সামনে এগিয়ে যেতে তারা কী চায়।’
এ সময় তিনি একাধিক প্রশ্ন তুলে ধরে বলেন, ‘তাঁরা কী খুঁজছেন? কী ধরনের সুযোগ তাঁরা পাননি? যে সুরক্ষা তাঁদের পাওয়ার কথা, তা কেন পাননি?’ তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ডের জনগণের প্রত্যাশা ও নিরাপত্তা বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গি জানতে আগ্রহী।
জনমত জরিপে গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দারা বরাবরই তাঁদের ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ধরনের দখলদারির বিরোধিতা করে আসছেন। এ অবস্থানের মধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
রোববার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জেফ ল্যান্ড্রিকে গ্রিনল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যদিও তাঁর কূটনৈতিক অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে বলে সমালোচনাও উঠেছে।
এই ঘোষণার পর ল্যান্ড্রি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে লেখেন, ‘গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার এই স্বেচ্ছাসেবী পদে আপনার জন্য কাজ করতে পারাটা সম্মানের।’
এর প্রতিক্রিয়ায় ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন ও গ্রিনল্যান্ডের প্রিমিয়ার জেন্স-ফ্রেডেরিক নিয়েলসেন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডবাসীরই অধিকারে থাকবে।
ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড তার কৌশলগত অবস্থান এবং বিপুল খনিজ সম্পদের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তবে ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন মূলত জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে, খনিজ সম্পদের জন্য নয়।
ল্যান্ড্রিকে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রকাশ্যে ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ডের প্রতি সংহতি জানিয়েছে।
গ্রিনল্যান্ড ও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে পরিণত করার বিষয়ে ট্রাম্পের বারবার উচ্চারিত আকাঙ্ক্ষা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক বিশ্লেষক সতর্ক করে বলেছেন, এ ধরনের জেদি অবস্থান ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে ঠেলে দিতে পারে।
সিএ/জেএইচ


