ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস তার ছোট ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রুর রাজকীয় উপাধি ‘ডিউক অব ইয়র্ক’সহ অন্যান্য সম্মানসূচক খেতাব প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত নারী নিপীড়নকারী জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে অ্যান্ড্রুর সম্পর্ক ও আচরণ নিয়ে বিতর্কের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) প্রকাশিত বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার রাতে বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে—রাজা চার্লসের ভাই এখন থেকে ‘অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর’ নামে পরিচিত হবেন। এর মধ্য দিয়ে তার রাজকীয় মর্যাদা ও খেতাব আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হলো।
উল্লেখ্য, এর আগেই অক্টোবরের মাঝামাঝি প্রিন্স অ্যান্ড্রু স্বেচ্ছায় তার রাজকীয় উপাধি ‘ডিউক অব ইয়র্ক’ ও অন্যান্য সম্মানসূচক খেতাব ত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে রাজা তৃতীয় চার্লসের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের পর তা এখন সম্পূর্ণভাবে কার্যকর হলো।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে ভার্জিনিয়া জিউফ্রি নামের এক নারী মার্কিন আদালতে অভিযোগ করেছিলেন যে, তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর যৌন নির্যাতনের শিকার হন। এই অভিযোগের পর থেকেই অ্যান্ড্রু আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। জিউফ্রি পরবর্তীতে মারা যান, এবং তার পরিবার দাবি করে—অত্যধিক মানসিক চাপের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেন।
এপস্টেইনের সঙ্গে অ্যান্ড্রুর ঘনিষ্ঠতা ও জিউফ্রির অভিযোগের জেরে দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিটিশ রাজপরিবারের ওপর চাপ ছিল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। অবশেষে রাজা তৃতীয় চার্লসের নির্দেশে সেই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করা হলো।
বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে, “রাজকীয় মর্যাদার ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে এই পদক্ষেপ জরুরি।” যদিও অ্যান্ড্রু তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রাজা চার্লস ও রানি ক্যামিলা ভুক্তভোগীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন।
রাজকীয় সূত্র জানিয়েছে, অ্যান্ড্রু এখন থেকে রাজা চার্লসের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন স্যান্ড্রিংহাম এস্টেটের একটি বাড়িতে বসবাস করবেন। তার ব্যয় ব্যক্তিগতভাবে রাজা বহন করবেন। অন্যদিকে, অ্যান্ড্রুর সাবেক স্ত্রী সারা ফার্গুসনও রয়্যাল লজ ত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে। তবে তাদের দুই কন্যা—প্রিন্সেস বিট্রিস ও ইউজেনি—তাদের রাজকুমারী খেতাব ধরে রাখবেন।
ব্রিটিশ সরকার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে। ইতিহাসে এর আগে সর্বশেষ ১৯১৭ সালে কোনো রাজপুত্রের উপাধি বাতিল করা হয়েছিল, যখন প্রিন্স চার্লস এডওয়ার্ড প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির পক্ষে লড়াই করায় তার ‘ডিউক অব আলবানি’ খেতাব হারান।
সিএ/এমআর


 
                                    
