ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সেনাবাহিনীকে গাজা উপত্যকায় ‘তাৎক্ষণিক ও শক্তিশালী’ হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। দীর্ঘ বৈঠকের পর সৌরভবাদী এই নির্দেশনা আসে, যেখানে তিনি অভিযোগ করেন যে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, হামাস জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দিতে বিলম্ব করায় এবং বাইরে থেকে নির্ধারিত প্রক্রিয়া ভাঙায় তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই নির্দেশনার ঠিক আগে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে ব্যাপক গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। মিসর সীমান্তের নিকটবর্তী রাফা ও খান ইউনিসের পূর্ব অংশে একই সঙ্গে বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গেলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়েছে এবং এক ইসরায়েলি সেনা আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস গতকাল (সোমবার) একটি কফিন হিসেবে ইসরায়েলি এক জিম্মির মরদেহের একটি অংশ ফেরত দিয়েছে—তবে তারা অভিযোগ করে যে কয়েকজন জিম্মির মরদেহ ফেরত না দেয়ায় ও প্রসেস মেনে না চলায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙা হয়েছে। অপরপক্ষে হামাস বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী নিহতদের মরদেহ উদ্ধারে বাধা সৃষ্টি করছে এবং প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই বিবাদ আবেগ ও উত্তেজনা বৃদ্ধি করলে যে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি রয়েছে, তা দ্রুত ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সামরিক তৎপরতার ঝুঁকি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাজার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও হতাশা তীব্র হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোলাগুলির পর বিমান হামলা বা বর্ধিত স্থল অভিযান শুরু হলে সেখানে দ্রুত মানবিক সংকট গান্ধে উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করেছেন যে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ধরে রাখতে দুপক্ষের মধ্যকার বিশ্বাস পুনর্গঠন প্রয়োজন, নতুবা সংঘাত আরও তীব্র হবে এবং বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে।
নেতানিয়াহুর নির্দেশের প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের সেনা কমান্ডারদের কাছ থেকে কৌশলগত পরিকল্পনা ও অপারেশনাল রিপোর্ট তদারকি করা হবে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাধ্যম এবং অঞ্চলের দূতাবাসগুলো পরিস্থিতি নজরদারি করছে এবং সম্ভবত দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু হতে পারে যাতে উত্তেজনা শিথিল করা যায়।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরা।
সিএ/এমআর


