ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন ফাতাহসহ সব ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর সঙ্গে জাতীয় সংলাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। গোষ্ঠীটির মুখপাত্র হাজেম কাসেম তুরস্কের সরকারি বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, সম্প্রতি মিসরের মধ্যস্থতায় কায়রোতে বৈঠক হয়েছে পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) জোটের প্রধান শরিক ফাতাহ এবং হামাসের নেতাদের মধ্যে। সেই বৈঠকের পর হামাসের হাইকমান্ড জাতীয় সংলাপে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
হাজেম কাসেম বলেন, “পিএ হলো এমন একটি ফিলিস্তিনি প্রতিষ্ঠান, যাকে কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা খোলা মনে সব ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর সঙ্গে সংলাপে বসতে চাই এবং পিএ জোটসহ সব দলের প্রতি হাত বাড়িয়ে দিতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে ফিলিস্তিন যাচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে গাজা ও পশ্চিম তীরে সক্রিয় রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করা জরুরি। হাজেমের ভাষায়, “আমরা সদ্য এক ভয়াবহ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছি, কিন্তু বিপদ এখনও কাটেনি। যদি আবার কোনো বিপর্যয় ঘটে, তাহলে শুধু হামাস নয়, বরং পুরো ফিলিস্তিনই তার শিকার হবে।”
২০০৬ সালের আগে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেমে ক্ষমতায় ছিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ)–এর নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক জোট, যার বৃহত্তম শরিক দল ফাতাহ। বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফাতাহের শীর্ষ নেতা।
২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয় হামাস এবং ফাতাহকে উৎখাত করে। সেই থেকে দুই গোষ্ঠীর সম্পর্ক চরম বৈরী অবস্থায় রয়েছে। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় আর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
২০২৪ সালে গাজায় ফিলিস্তিনি বাহিনীর অভিযানের সময় নিজেদের মতপার্থক্য ভুলে ঐক্য স্থাপনের চেষ্টা করেছিল চীন। বেইজিংয়ে ফাতাহ ও হামাস নেতাদের বৈঠক হলেও কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
এর পর মিসরের মধ্যস্থতায় গতকাল কায়রোতে আবারও দুই গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়। সেই বৈঠক শেষে আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাজেম কাসেম জানান, হামাস এখন জাতীয় ঐক্যের পথে অগ্রসর হতে চায়।
সিএ/এমআর


