নববর্ষ উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার জয় অনিবার্য। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) প্রচারিত এই ভাষণে তিনি চলমান যুদ্ধকে রাশিয়ার জন্য একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ লড়াই হিসেবে তুলে ধরেন।
প্রায় চার বছর ধরে চলা ইউক্রেন অভিযানে উভয় পক্ষের সামরিক হতাহতের সংখ্যা কয়েক লাখে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পুতিন তার সংক্ষিপ্ত ভাষণের বড় অংশ উৎসর্গ করেন ইউক্রেনে অবস্থানরত রুশ ‘যোদ্ধা ও কমান্ডারদের’। তিনি তাদের ‘নায়ক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আমরা তোমাদের ওপর বিশ্বাস রাখি—আর আমাদের বিজয়ের ওপরও।’ একই সঙ্গে তিনি রুশ জনগণকে আশ্বস্ত করেন, যুদ্ধের চূড়ান্ত ফল রাশিয়ার পক্ষেই যাবে।
ভাষণে পুতিন তার এক বাসভবনে কথিত ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। কিয়েভ এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এটি মার্কিন নেতৃত্বাধীন শান্তি উদ্যোগকে ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে উত্থাপিত দাবি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার হয়েছে। তবে সেই প্রেক্ষাপটে পুতিন ধারাবাহিকভাবে জানিয়ে আসছেন, আলোচনায় অগ্রগতি না হলে রাশিয়া যেসব ইউক্রেনীয় অঞ্চলকে নিজেদের অংশ ঘোষণা করেছে, সেগুলোর অবশিষ্ট এলাকাও সামরিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দখল করতে চায়।
রাশিয়ার সবচেয়ে পূর্বাঞ্চলীয় কামচাটকা উপদ্বীপে প্রথম সম্প্রচারিত হয় পুতিনের ঐতিহ্যবাহী নববর্ষের ভাষণটি। উল্লেখযোগ্যভাবে, ৩১ ডিসেম্বর পুতিনের ক্ষমতায় আসার ২৬ বছর পূর্ণ হয়।
বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকা রুশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মস্কো প্রায় প্রতিদিনই ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে, যাতে হাজারো বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো ও বেসামরিক স্থাপনায় নিয়মিত হামলার ফলে শীতকালজুড়ে বহু মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দিন কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। কিয়েভের বাইরে ভিশহোরোদ শহরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক দিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের জীবন নরকযন্ত্রণায় পরিণত হয়েছে।
সূত্র: এএফপি
সিএ/এএ


