অক্টোবর মাসে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর থেকেও গাজায় সহিংসতা থামেনি। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ৮২ জন শিশু নিহত হয়েছে। এই পরিস্থিতিকে ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
শুক্রবার দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউনিসেফ জানায়, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় শিশুদের প্রাণহানি অব্যাহত রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের চরম লঙ্ঘন। সংস্থাটি এই সহিংসতার ধারাবাহিকতা বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস বলেন, ‘ইউনিসেফের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, ১০ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় অন্তত ৮২ জন শিশু নিহত হয়েছে। এটি আবারও গাজার ভয়াবহ বাস্তবতার চিত্র তুলে ধরে, যা অবশ্যই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।’
গাজার মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ৩৮৬ জন নিহত এবং ৯৮০ জন আহত হয়েছে। নিহত ও আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৩৫০টির বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার অধিকাংশই তথাকথিত ‘ইয়েলো লাইন’-এর আশপাশে সংঘটিত হয়েছে। এসব ঘটনায় অন্তত ১২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সাতজন নারী ও ৩০ জন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় বসবাসের পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, ইসরায়েল এখনো ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে, যা যুদ্ধবিরতির মানবিক প্রোটোকল লঙ্ঘনের শামিল।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা ৭১ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানানো হয়েছে। নিহতদের বড় অংশই নারী ও শিশু। একই সময়ে আহত হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজারেরও বেশি মানুষ। যুদ্ধবিরতি থাকা সত্ত্বেও এই প্রাণহানি ও সহিংসতা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
সিএ/এএ


