ভারতের আদানি পাওয়ার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে বকেয়া বিল পরিশোধের দাবি জানিয়ে সতর্ক করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না হলে ১১ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আমরা আদানির পক্ষ থেকে চিঠি পেয়েছি। তারা জানিয়েছে, ১০ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া না পরিশোধ করলে ১১ নভেম্বর থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।”
অক্টোবরের শেষ দিকে আদানি পাওয়ারের ভাইস চেয়ারম্যান অবিনাশ অনুরাগ বিপিডিবি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেন, বিপিডিবি প্রায় ৪৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বকেয়া রেখেছে, যার মধ্যে ২৬২ মিলিয়ন ডলার ‘বিরোধহীন পাওনা’ হিসেবে বিপিডিবি নিজেই স্বীকার করেছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্টের (পিপিএ) ১৩.২ ধারা অনুযায়ী বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ হলে সরবরাহ স্থগিতের অধিকার আদানির রয়েছে। সরবরাহ বন্ধ থাকলেও তারা ‘ক্যাপাসিটি পেমেন্ট’ পাওয়ার অধিকার রাখে।
বিপিডিবির একাধিক সূত্র জানায়, আদানির দাবিকৃত টাকার পরিমাণ নিয়ে তাদের আপত্তি রয়েছে। কয়লার দাম ও সরবরাহ ব্যয় নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি না হলে পুরো পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব নয়।
এর আগেও আদানি পাওয়ার এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। গত বছর তারা ৮০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া দাবি করে বাংলাদেশের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছিল। তখন বিপিডিবি অভিযোগ করেছিল, আদানি নিজস্ব হিসাব পদ্ধতি ব্যবহার করে বকেয়ার অঙ্ক বাড়িয়ে দেখিয়েছে।
পিডিবির ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে প্রতি মাসে গড়ে ৯৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এই কেন্দ্রটি মূলত বাংলাদেশে রপ্তানির উদ্দেশ্যেই নির্মিত হয়।
বর্তমানে বকেয়া পরিশোধ ইস্যুতে দুই পক্ষের মধ্যে নতুন আলোচনার প্রস্তুতি চলছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমাধান না হলে দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সিএ/এমআর


